সারাদেশ

একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না

  প্রতিনিধি ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১:৩৬:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

জুরাইন এলাকা ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন। এই আসনে ভোটার প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার।ঢাকা মহানগর ও জেলার ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোটার এই আসনে।তবে ভোটার কম হলেও পোস্টারের ব্যাপকতা ঢাকার অন্য আসনগুলোর চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জুরাইন, কদমতলী ও শ্যামপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অলিগলি ছেয়ে গেছে পোস্টারে।

রাজধানীর একটি ছাপাখানার একজন মালিক জানান, একদম নিম্নমানের কাগজ দিয়েও যদি কেউ এক লাখ নির্বাচনী পোস্টার ছাপান, তাহলে খরচ পড়বে তিন লাখ টাকা।

পূর্ব জুরাইনের বিক্রমপুর প্লাজা থেকে মিষ্টি দোকানের মোড় পর্যন্ত হাজী খোরশেদ আলী সরকার সড়কের দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার।এই সড়ক ঢেকে গেছে হাজারো পোস্টারে।পোস্টারের পাশাপাশি এই সড়কের দুই দিকে নৌকা ও লাঙ্গলের অসংখ্য ব্যানার টাঙানো হয়েছে।এই সড়কে চলাচলকারী প্রায় প্রতিটি ব্যাটারিচালিত রিকশার সামনে–পেছনে পোস্টার ও স্টিকার দেখা গেছে।পোস্টার–ব্যানারের ছড়াছড়ি দেখা গেছে আশপাশের বিভিন্ন সড়কেও। গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এই আসনের তিনটি ওয়ার্ড (৫২, ৫৩ ও ৫৪) মোটরসাইকেলে করে ঘুরে এমন চিত্র দেখতে দেখেছেন একজন প্রতিবেদক ও একজন আলোকচিত্রী।

নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী,একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না।আর প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটারপ্রতি নির্বাচনী ব্যয় হবে সর্বোচ্চ ১০ টাকা।তবে নির্বাচনী এলাকার ব্যয় সর্বোচ্চ কোনোভাবেই ২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না।

রাজধানীর একটি ছাপাখানার একজন মালিক জানান, একদম নিম্নমানের কাগজ দিয়েও যদি কেউ এক লাখ নির্বাচনী পোস্টার ছাপান, তাহলে খরচ পড়বে তিন লাখ টাকা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাতটি ওয়ার্ড নিয়ে এই আসন গঠিত।ওয়ার্ডগুলো হলো ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৮ এবং ৫৯।এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন।সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে যে ২৬টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে,তার মধ্যে এই আসন নেই।এখানে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে সানজিদা খানমকে। তিনি এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব আওলাদ হোসেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন তিনি। এবার তিনি ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এই তিন প্রার্থীসহ ঢাকা–৪ আসনে মোট ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সংসদীয় এই আসনের আওতাধীন জুরাইনের কমিশনার রোড, শ্যামপুরের বড়ইতলা ও কদমতলীয় শহীদ মুক্তার হোসেন রোড এলাকার ছয়জন দোকানি ও আটজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছে গনমাধ্যমের কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দোকানি বলেন, বিএনপি থাকলে নির্বাচন আরও জমতে।আরেকজন দোকানি বলেন, যত পোস্টার লাগানো হয়েছে, বাস্তবে ভোটের উত্তাপ ততটা নেই।

যেখানে বাড়ির দরজা, দেয়াল, বিদ্যুতের খুঁটিতেও প্রার্থীদের পোস্টার

যখন–তখন মাইকিং

ঢাকার অন্য আসনগুলোতে পোস্টারের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের একচেটিয়া দাপট দেখা গেলেও এই আসনে নয়জন প্রার্থী প্রায় সমানতালেই পোস্টার লাগিয়েছেন।তবে এর মধ্যে নৌকা, লাঙ্গল ও ট্রাক প্রতীকের পোস্টার বেশি।এই তিন প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং বেশি হচ্ছে।তবে মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে আচরণবিধি মানা হচ্ছে না বলে জানান জুরাইন এলাকার একাধিক দোকানি।তাঁরা বলেন, সকাল ১০টা–১১টা থেকে মাইকিং শুরু হয়, রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে।যদিও জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণবিধিমালা অনুযায়ী, বেলা দুইটার আগে এবং রাত আটটার পরে মাইকিং করা যাবে না।

গতকাল পৌনে একটার দিকে সংসদীয় আসনের দোলাইরপাড় এলাকায় নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে মাইকিং করতে দেখা যায়।আর বেলা সোয়া একটার দিকে জুরাইনের তিতাস গ্যাস রোডে লাঙ্গলের পক্ষে মাইকিং হচ্ছিল।অবশ্য সড়ক–ফুটপাতের জায়গা দখল করে এই আসনের তিনটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী ক্যাম্প (কার্যালয়) চোখে পড়েনি।

ঢাকা–৪ সংসদীয় আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরকার  বলেন, প্রচারের শুরু থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন তাঁরা।মাঠে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও সক্রিয়।তাই এই আসনে আচরণবিধি ভঙ্গের ঘটনা কম।ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় পোস্টার–স্টিকার লাগানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

 

আরও খবর

Sponsered content