সারাদেশ

উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে আবারও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন-রুয়েট কর্তৃপক্ষের

  প্রতিনিধি ৩ আগস্ট ২০২৩ , ২:২৯:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি।।রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে আবারও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া পুরকৌশল অনুষদের ডিন মো. নিয়ামুল বারি।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অন্য অনুষদের ডিনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

উপাচার্যের অভাবে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. নিয়ামুল বারিকে একাডেমিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়,তবে এতে পরিস্থিতির সমাধান হয়নি।কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত দুটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নেই। আরও কয়েকটি এই মাসেই শূন্য হয়ে যাবে।বিভাগীয় সভাপতি ছাড়া পরীক্ষা গ্রহণের নিয়ম নেই।আবার একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া ডিনও বিভাগীয় সভাপতি নিয়োগের ক্ষমতা রাখেন না।ফলে ওই বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসতে না পারার আশঙ্কা করছেন।এমন অবস্থায় গতকাল বুধবার দিনভর মানববন্ধন,ঘেরাও অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সিএসই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,তাঁরা দুপুরে মানববন্ধন করার পর মন্ত্রণালয় থেকে একাডেমিক কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিন নিয়ামুল বারির কাছে যান।সেখানে তাঁরা পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে স্পষ্ট বক্তব্য চান।তাঁরা মন্ত্রণালয়ে সমস্যার সমাধান চেয়ে আরেকটি চিঠি পাঠানোর দাবি তোলেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বিকেলে একটি সভা ডাকেন ডিন নিয়ামুল বারি।সেই সভায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন,পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তৌহিদ আরিফ খান চৌধুরীসহ তিন অনুষদের ডিন উপস্থিত ছিলেন।পরে সন্ধ্যার আগে সভা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী রোববার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাবেন নিয়ামুল বারি।

অধ্যাপক নিয়ামুল বারি বলেন,চিঠিটি আসার পর নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।এ কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন।কারণ,তাঁদেরও পরীক্ষা দেওয়ার অধিকার আছে।তবে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের বিভাগগুলোয় বিভাগীয় প্রধান নেই। বিভাগীয় প্রধান ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া যায় না।কিন্তু তাঁর ক্ষমতা নেই যে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেবেন তিনি।এটি তিনি শিক্ষার্থীদের বারবার বুঝিয়েছেন। পরে তাঁরা একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রোববার এই পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,গত বছরের জুলাইয়ের শেষে নিয়মিত উপাচার্য রফিকুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হয়।পরে ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রুয়েটের জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপক ও অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন মো. সাজ্জাদ হোসেনকে উপাচার্যের দৈনন্দিন কার্যসম্পাদনের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।তবে ২৮ মে পদোন্নতির দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তিনি।এর পর থেকে একাডেমিক পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান্য কার্যক্রমেও প্রায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে গত ২৩ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সেলিম হোসেন।অন্যদিকে ২৫ জুলাই প্রকৌশল অনুষদের ডিন নিয়ামুল বারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন।সেই চিঠিতে তিনি পরীক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে কোনো একজন ডিনকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।সেই চিঠির সাড়া দিয়ে তাঁকেই সেই দায়িত্ব প্রদান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এতে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আরও খবর

Sponsered content