আন্তর্জাতিক

ইরানে সরাসরি হামলা চালাতে বাইডেনের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে

  প্রতিনিধি ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ , ৪:০৩:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।জর্ডানে সিরিয়া সীমান্তের কাছে এক মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা নিহত ও ৩৪ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ইরানকে দোষারোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।এরপরই ইরানে সরাসরি হামলা চালাতে বাইডেনের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে।

যদিও জর্ডানে ওই হামলার ঘটনায় ইরান তাদের কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি করেছে।তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন,ইরাক এবং সিরিয়ায় তৎপর ইরান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো জর্ডানের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।

বৃহত্তর পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় বাইডেন সরাসরি কোনও পাল্টা সামরিক হামলার পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে এতদিন অনিচ্ছুক ছিলেন।

তবে এবারের হামলার ঘটনার পর রোববার সাউথ ক্যারোলাইনায় বাইডেন এক নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে বলেছেন,আমরা এ হামলার জবাব দেব।” তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,জর্ডানে প্রাণঘাতী ওই হামলার জবাবে বাইডেন ইরানের বাইরে এমনকি ভেতরেও ইরানি বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে পারেন।কিংবা শুধুমাত্র ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আরও সতর্কতার সঙ্গে প্রতিশোধমূলক হামলার পথও বেছে নিতে পারেন।

গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীকে ইরাক,সিরিয়া,জর্ডান এবং ইয়েমেন উপকূল থেকে ইরান-সমর্থিত বাহিনী ১৫০ বারেরও বেশি আক্রমণ করেছে।

তবে সিরিয়ার সঙ্গে জর্ডানের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের কাছে টাওয়ার ২২ নামে পরিচিত দূরবর্তী একটি চৌকিতে রোববারের হামলার আগ পর্যন্ত আগের কোনও হামলাতেই মার্কিন সেনা নিহত কিংবা এত বেশি সেনা আহত হয়নি।

আর এ কারণেই এবার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুংকার দিয়েছেন বাইডেন।ইরানে সরাসরি হামলা করার জন্য তার ওপর রাজনৈতিক চাপও তাই আরও বেড়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে প্রচারাভিযানের মাঠে থাকা রিপাবলিকানরা বাইডেনের ওপর চাপ বাড়াতে একটুও কালক্ষেপণ করেনি।

জর্ডানে ড্রোন হামলায় মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন রিপাবলিকান দলের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি।

ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রতিপক্ষ নিকি হ্যালিসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট রিপাবলিকান জর্ডানের ঘাঁটিতে হামলার ঘটনার জন্য জো বাইডেনের দুর্বলতা ও তার ইরান নীতিকে দায়ী করেছেন।

ট্রাম্প বলেন,এ হামলার ঘটনা জো বাইডেনের দুর্বলতা ও আত্মসমর্পণের আরও একটি ভয়ংকর ও দুঃখজনক পরিণতি। ওদিকে হ্যালি বলেন,জো বাইডেন যদি ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে এতটা দুর্বল না হতেন,তাহলে তারা কখনওই মার্কিন বাহিনীকে হামলার নিশানা করতে পারতনা।

রিপাবলিকানদের অনেকেই বলছে,মার্কিন বাহিনী সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করেছে যখন একটি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র এসে সামরিক ঘাঁটির প্রতিরক্ষা ছিন্নভিন্ন করে দেবে।

রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন বলেন,“তিনি (বাইডেন) আমাদের সেনাদের বসা হাঁসের মতো করে রেখেছিলেন।এই হামলার একমাত্র উত্তর হতে হবে ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক সামরিক প্রতিশোধ ।”

রিপাবলিকান নেতা এবং মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি ওভারসাইট কমিটির নেতৃত্বে থাকা মাইক রজার্সও তেহরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেন,‘সন্ত্রাসী ইরান সরকার এবং তাদের চরমপন্থি দোসরদের যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের জবাবদিহি আরও আগেই করা উচিত ছিল বাইডেনের।”

বাইডেন প্রশাসন বলেছে,বিশ্বজুড়ে মার্কিন সেনাদের রক্ষায় তার প্রশাসন অনেক চেষ্টাই করে থাকে।তবে গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নিয়ন্ত্রণে বাইডেনের কৌশল যে ব্যর্থ হচ্ছে তা নিয়ে প্রকাশ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একজন ডেমোক্র্যাট।

আরও খবর

Sponsered content