আন্তর্জাতিক

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা,মানবাধিকারের মতো গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাসী-মার্কিন মুখপাত্র

  প্রতিনিধি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:৩৬:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গত মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।প্রকাশক সম্পর্কে আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নে আমি বলবো,আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা,মানবাধিকারের মতো গণতান্ত্রিক নীতিগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা অব্যাহত রেখেছি।এগুলো আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে অবদান রাখে।

এতে উঠে এসেছিল বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলা,বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ না পাওয়ার মতো বিষয়গুলো।তবে এদিন মার্কিন মুখপাত্রের কাছ থেকে জোরালো কোনো মন্তব্য পাননি প্রশ্নকর্তারা।স্বাভাবিক কূটনৈতিক ভাষাতেই উত্তর দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবারের প্রেস ব্রিফিং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপ-মুখপাত্র (প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন) ভেদান্ত প্যাটেল।সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড।শুরুতে সাম্প্রতিক আফ্রিকা সফরের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানান লিন্ডা এবং বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

এরপর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শুরু করেন ভেদান্ত প্যাটেল।তার কাছে সাংবাদিকরা রাশিয়া,ইউক্রেন,মিয়ানমার,আফগানিস্তান, সুদান,তিউনিশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন করেন।ধীরেসুস্থে সব প্রশ্নেরই জবাব দেন মার্কিন মুখপাত্র।

ঘণ্টাব্যাপী প্রেস ব্রিফিংয়ের ৩৯তম মিনিটে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্ন করেন উপস্থিত এক সাংবাদিক।তিনি বলেন,বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচকদের আবারও নিশানা করা হচ্ছে।প্রখ্যাত নাগরিক সমাজের সদস্য ও অধিকারকর্মী রিজওয়ানা হাসানের গাড়িবহর ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছে।আপনি জানেন,ডোনাল্ড লু (দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিদর্শন করেছেন এবং তার (রিজওয়ানা) সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।

এছাড়া,শীর্ষস্থানীয় বই প্রকাশক ও ভিন্নমতাবলম্বী লেখকদের রচনার জন্য পরিচিত আদর্শ প্রকাশনীকে দেশের বৃহত্তম বইমেলায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।খবর রয়েছে,ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আরেকটি বইমেলায় একই প্রকাশককে প্যাভিলিয়ন খুলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সহকারী মন্ত্রী এবং (অস্পষ্ট) বাংলাদেশ নিয়ে খুব বেশি ব্যস্ত এবং অবাধ,সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের দাবি করছেন?

উত্তরে ভেদান্ত প্যাটেল বলেন,সর্বত্র যারা মানবাধিকার ও মর্যাদার স্বীকৃতির জন্য লড়াই করছেন,তাদের সমর্থনে প্রকাশ্যে কথা বলতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র।বিশ্বজুড়ে শান্তি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি হলো গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা।এগুলো অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত।

মার্কিন মুখপাত্রের এই জবাব শেষ হলে প্রথমজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও এক সাংবাদিক বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্ন করেন।তিনি বলেন, আপনি সম্ভবত জানেন,বাংলাদেশ সরকার বলেছে,রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানের জন্য,যেমনটি তারা বর্ণনা করেছে, প্রায় ২০০টি ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে কি আপনার কোনো মন্তব্য আছে? এটি কি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের বিষয়?

উত্তরে ভেদান্ত প্যাটেল বলেন,অবশ্যই যেকোনো ধরনের সেন্সরশিপ বা ওই ধরনের তথ্য চ্যানেল ব্লক করা গভীর উদ্বেগের বিষয় হবে।আমি এর সুনির্দিষ্ট প্রতিবেদনটি দেখিনি। তবে আমরা দেখবোওই বিষয়ে আপনাকে আরও নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারি কি না।

প্রসঙ্গেত,গত ২৬ জানুয়ারি দুপুরে চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা এলাকায় হামলার শিকার হন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।আকবর শাহ থানার সুপারি বাগান এলাকায় পাহাড় কেটে কালির ছড়া খাল ভরাটের ঘটনা পরিদর্শনে গেলে রিজওয়ানা হাসান এ হামলার শিকার হন।এসময় তার সঙ্গে ছিলেন-বেলার কর্মকর্তা ও স্থানীয় পরিবেশ সাংবাদিকরা।এ নিয়ে রিজওয়ানা হাসান আকবর শাহ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content