ব্যবসা ও বাণিজ্য সংবাদ

আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে আলুর দাম-পেয়াজের দামে অস্বস্তি

  প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২৩ , ৩:১৬:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দিন দিন দাম বাড়ছে নিত্যপণ্যের।কয়েক মাসের ব্যবধানে বাজারের সব থেকে কম দামের খাদ্যপণ্যটি এখন চোখ রাঙাচ্ছে।আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে আলুর দাম। দেড় মাস আগেও ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া আলুর কেজি এখন স্থানভেদে ৬০-৭০ টাকা।

যা সরকার নির্ধারিত দামের দ্বিগুন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী,দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা ৮৫-৯০ লাখ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ১.১২ কোটি টন আলু উৎপাদিত হয়।তবে কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণে ঘাটতি এবং বীজের জন্য আলু প্রয়োজন হওয়ায় আরো আলু উৎপাদন প্রয়োজন।

আলুর উৎপাদন কম হওয়া নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ।

কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন,যদিও সরকার এ বছর ১ কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদনের কথা জানিয়েছে,বাস্তবে ৮-৮.৫ মিলিয়ন টনের বেশি আলু উৎপাদন হয়নি।

এদিকে অস্থিরতা চলছে পিয়াজের বাজারে।মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ইন্ডিয়ান পিয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫-৪০ টাকা পর্যন্ত।

বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়।যা গত ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৮০-৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন,ভারত পিয়াজ রপ্তানিতে নূন্যতম মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ায় মাত্র দুই দিনেই পণ্যটির বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।

আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, হিলিসহ সর্বত্র পিয়াজের দাম বেড়েছে। ভারতে দাম বৃদ্ধি ও নতুন করে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো চাহিদা মতো এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) না দেওয়ার প্রভাব পড়েছে দিনাজপুরের পিয়াজের বাজারে।

২-৩ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি পিয়াজ স্থলবন্দরে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে। দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পাইকার ও কমিশন ব্যবসায়ীরাসহ ক্রেতারা।

সোমবার দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারেও পাইকারিতে প্রতিকজি পিয়াজ বেড়ে ১০৫-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে ১১০-১২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

রবিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের চার প্রদেশ (ইন্দোর, সাউথ, নাসিক ও নগর রাষ্ট্র) থেকে ১৫ ট্রাকে ৩৮৪ মেট্রিক টন পিয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

রফিকুল, স্বপনসহ কয়েক জন পাইকারি ব্যবসায়ী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পিয়াজের দাম দফায় দফায় বাড়ার কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ৬০ টাকার পিয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ভারতে পিয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রভাব দেশের বাজারে পড়েছে।রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি করেছে ভারত। আগে ২০৫ মার্কিন ডলারে পিয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে ভারত সরকার সেটি বাড়িয়ে ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে। এতে করে ভারত থেকে পিয়াজ আমদানি করতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়বে ৮৮ টাকা।

অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৪-৬৫ টাকা এবং আলু ৩৫-৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সরকারি সংস্থা মাঠে নামিয়েও নির্ধারিত সেই দাম বাজারে কার্যকর করা যায়নি। উল্টো দেড় মাস পরে বেঁধে দেওয়া দামের দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু।

এদিকে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় সরবরাহ বাড়াতে এবং দাম স্থিতিশীল রাখতে আলু আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

আরও খবর

Sponsered content