প্রতিনিধি ১৩ মে ২০২৩ , ৫:৩৯:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।সাপ্তাহিক ছুটির দিনে (শুক্রবার) ১১৬ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করেছে সরকার। এতে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে বিসিএস ১৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ৪১ জন এবং প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে মিশে যাওয়া ইকোনমিক ক্যাডারের ১৫ ও ১৭তম ব্যাচের ৪৯ জন কর্মকর্তা এবার পদোন্নতি পেয়েছেন।
বাকি কর্মকর্তারা আগের বঞ্চিত এবং অন্যান্য ক্যাডারের। গতকাল এ-সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপনে ১১৪ জনের নাম প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।বাকি দুজন লিয়েনে থাকায় তাঁরা ফিরলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগদানপত্র ই-মেইলে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হলেও পদায়ন করা হয়নি। শিগগির বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ইনসিটু (আগের পদে রাখা) করা হবে।ফলে তাঁদের আগের পদেই কাজ করে যেতে হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,এই পদোন্নতির ফলে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৬। অথচ অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৪০। অর্থাৎ পদের চেয়ে তিন গুণ কর্মকর্তা হলো প্রশাসনে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ) মো. আবদুস সবুর মণ্ডল বলেন,মোট ১১৬ জন যুগ্ম সচিবের পদোন্নতি হয়েছে। তবে প্রজ্ঞাপন হয়েছে ১১৪ জনের।বাকি দুজন লিয়েন থেকে ফিরলে প্রজ্ঞাপন হবে।ছুটির দিনে পদোন্নতি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,পদোন্নতির সারসংক্ষেপে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ামাত্র আমরা প্রজ্ঞাপন জারি করি।এতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন,
না রাত তা বিবেচনা করা হয় না। অতীতেও এ ধরনের নজির রয়েছে।’
বঞ্চিত যাঁরা
জানা গেছে, বিসিএস ১৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের অন্তত ৯ জন এবার পদোন্নতি পাননি। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন অনুবিভাগের প্রধান মো. আব্দুর রউফ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক অধিশাখার যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান এবং এনসিটিবির সদস্য মো. মুনির হোসেন খান। প্রশাসনে ভালো কর্মকর্তা হিসেবে তাঁদের সুনাম আছে। তাঁদের পদোন্নতি না হওয়ায় বিস্মিত একই ব্যাচের অনেক কর্মকর্তাও।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,যাঁদের পদোন্নতি হয়নি,তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা আছে।কারও কারও নানা ধরনের অসংগতিও আছে।অনেকের বিরুদ্ধে মাঠে কাজ করার সময় অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে।
পদোন্নতি বিধিমালা অনুযায়ী,অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের এবং ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার থেকে আসা কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নিতে হয়।মূল্যায়নে অন্তত ৮৫ নম্বর পেতে হয়।যুগ্ম সচিব পদে কমপক্ষে তিন বছরসহ ২০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা কিংবা যুগ্ম সচিব পদে কমপক্ষে দুই বছর চাকরিসহ ২২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হন।
কোন ব্যাচের কতজন
প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,এবার ১৭তম ব্যাচের প্রশাসন ও বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডারের মোট ৭২ জন পদোন্নতি পেলেন।বিলুপ্ত হওয়া ইকোনমিক ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের একাংশও নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে গণ্য হয়েছে।এই ব্যাচের ১৮ জন পদোন্নতি পেয়েছেন।এ ছাড়া বিসিএস নবম ব্যাচের একজন, একাদশ ব্যাচের একজন,১৩তম ব্যাচের একজন এবং ১৫তম ব্যাচের ছয়জনসহ আগে বঞ্চিত ১২ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।অন্যান্য ক্যাডার থেকে আসা ১২ কর্মকর্তাও পদোন্নতি পেয়েছেন।পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্তত দুই জোড়া দম্পতি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন,পদের চেয়ে বেশি কর্মকর্তা হওয়ায় পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে আগের পদে রাখা হবে।অর্থাৎ এই কর্মকর্তাদের আগের পদেই কাজ করতে হবে।আপাতত তাঁরা নতুন ডেস্ক পাচ্ছেন না।