প্রতিনিধি ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:২৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি।বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে গ্রেপ্তার জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র দুই নেতার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বান্দরবান চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এএসএম এমরান তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মজিদ জানান।
এরা হলেন-জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সামরিক শাখার প্রধান রণবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাসার মৃধা।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মজিদ বলেন,সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রদোহী মামলায় সাত জঙ্গিকে আদালতে তুলে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।এ সময় আদালত রণবীর ও বাসার মৃধার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে বিচারক।বাকিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ জানয়ারি ভোর থেকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির পর ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের কাছ থেকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব।
পরে গ্রেপ্তার জঙ্গি সংগঠনের দুই সদস্যকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি টান্টু সাহা জানান,অভিযানস্থল কুতুপালং এলাকায় হলেও অস্ত্র উদ্ধার এবং জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা থেকে। তাই মামলাটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দায়ের করা হয়েছে।
দুই পক্ষের তুমুল গোলাগুলির পর কুতুপালং ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, পাহাড়ে-সমতলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে
আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা।তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল,তিনটি পিস্তলের ম্যাগাজিন,১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি খালি কার্টিজ,দুটি একনলা (দেশীয়) বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, ১০০ রাউন্ড পয়েন্ট টুটু (.২২) বোরের গুলি,নগদ ২ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের পরিচালক বলেন, “বিভিন্ন সূত্রে গোয়েন্দা তথ্যে তারা নিশ্চিত হন যে,রণবীর ও বাশার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে।ওই তথ্যের ভিত্তিতে কুতুপালং সাত নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘এ’ ব্লক ঘিরে সোমবার ভোর ৫টায় যৌথ চিরুনি অভিযান শুরু করে র্যাব।
র্যাবের অবস্থান বুঝতে পেরে জঙ্গিরা পাশের পাহাড়ে চলে যায়।র্যাব ওখানে অভিযান শুরু করলে সশস্ত্র লোকজন র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়।কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে দুই জঙ্গি নেতাকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় র্যাব।”
র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা,র্যাব-২,র্যাব-৩ এবং র্যাব-১৫ এর সদস্যরা এ অভিযানে অংশ নেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বেশ কয়েকজন তরুণের ঘর ছাড়া তদন্তে নেমে ২০২২ সালের অক্টোবরে র্যাব নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার কথা জানায়।তখনই র্যাব জানায়,পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলে দুর্গম এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে তুলেছে জামাতুল আনসার। এরপরে পাহাড়ে ধারাবাহিক অভিযানের খবর জানিয়ে আসছে এলিট ফোর্স র্যাব।
র্যাব বলছে,হরকাতুল জিহাদ,জেএমবি এবং আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু সদস্য ২০১৭ সালে নতুন এই উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে।পরে ২০১৯ সালে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে।