প্রতিনিধি ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:২৬:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি দেওয়া এক ভাষণে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী দল নয় এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে টিকে থাকা দলকে কোনোভাবেই নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়।

শেখ হাসিনা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,”আজ দেশের মানুষ সবচেয়ে কষ্টে আছে। আমি প্রায় পাঁচ কোটি মানুষকে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীত করেছিলাম,কিন্তু আজ আবার ছয় কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যের নিচে নেমে গেছে।” তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুদের ব্যবসার প্রসঙ্গে বলেন, “দারিদ্র্য না থাকলে তো ইউনুসের সুদের ব্যবসাও চলবে না।”
দলের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক এমপি গোলাপসহ তৃণমূলের অসংখ্য নেতাকর্মী বর্তমানে কারাগারে বন্দি,এবং প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার করা হচ্ছে।কারাগারে বন্দিদের ঠিকমতো খাবার,সুপেয় পানি এবং অসুস্থদের চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।
শেখ হাসিনা বলেন,আজ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার অপরাধে শিশুদের ওপরও নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন,এ ধরনের ঘটনার ছবি ও প্রমাণ সংগ্রহ করে রাখার জন্য,কারণ একদিন এসবের বিচার হবে।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রস্তুতি সমালোচনা করে তিনি বলেন,”আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটারকেই বাদ দেওয়া হয়েছে,সেখানে কিসের নির্বাচন?কার ভোটে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়—এ প্রশ্নের উত্তর তাদের দিতে হবে।” তিনি মনে করিয়ে দেন,আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর ১৩ বার নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৯ বার সরকার গঠন করেছে।
শেখ হাসিনা তার শাসনামলের কৃতিত্ব তুলে ধরে বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছিল এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছিল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা হচ্ছে।প্রশ্ন করি—কোথায় আমি গণহত্যা করেছি? ৭.৬২ বুলেট কোথা থেকে এলো?কে অস্ত্র সরবরাহ করলো?”
তিনি অভিযোগ করেন,বর্তমানে বিচার বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়—সব জায়গায় দখলদারি চলছে।বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হলেও আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পড়াশোনার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের সার্টিফিকেট বাতিল করা হচ্ছে।
শেষে শেখ হাসিনা বলেন,”আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করাই তাদের লক্ষ্য।কিন্তু তারা ভুলে যাচ্ছে—আওয়ামী লীগ জনগণের দল।” তিনি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান,স্বাধীনতার চেতনা ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার জন্য।















