প্রতিনিধি ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:১৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।এই প্রজন্ম কি জানে ২০০১–২০০৬ সালের বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের সময় দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কতটা সংকটাপন্ন ছিল? ১৭ বছরের পুরনো ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে যে,সেই সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় গভীর দুর্নীতি ও রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ ছিল।

হাওয়া ভবন: দুর্নীতির কেন্দ্র
“হাওয়া ভবন” নামে পরিচিত একটি ভবন ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে,যা কার্যত অঘোষিত ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।সূত্রের দাবি,এখানে সরকারের নিয়োগ-বাণিজ্য,বড় প্রকল্পের ঠিকাদারী চুক্তি ও ঘুষ–কমিশনের সকল কার্যক্রম সমন্বয় করা হতো।এই কেন্দ্রের নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে তারেক রহমান।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।এতে ২৪ জন নিহত হন,শতাধিক আহত।হামলার তদন্ত এখনও রাজনৈতিক ও বিচারিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু।
১০ ট্রাক অস্ত্র কেলেঙ্কারি
চট্টগ্রামের বিএমডিপোর্টে ১০ ট্রাক অবৈধ অস্ত্র ধরা পড়ে। তদন্তে উঠে আসে যে,এসব অস্ত্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ULFA-র কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে আসে।
কয়লা খনি ও নাইকো কেলেঙ্কারি
বগুড়ার কয়লা খনি ও নাইকো গ্যাস চুক্তিতে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।এই মামলায় খালেদা জিয়া এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম এসেছে।
টু-ইন-ওয়ান দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য
মন্ত্রীরা একসঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতেন।বড় প্রকল্প থেকে ১০–২০% কমিশন আদায়ের অভিযোগ থাকায় সরকারি প্রকল্পগুলো স্বচ্ছতার বিপরীতে পরিচালিত হতো।
শিক্ষা ও প্রশাসনে দলীয়করণ
সরকারি নিয়োগ,বিসিএস পরীক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলীয়ভাবে পছন্দমতো লোক বসানো হতো।এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রশাসনিক দুর্বলতা তৈরি করেছিল।
‘দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন’
Transparency International-এর ২০০১–২০০৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী,বাংলাদেশ ওই সময় একটানা বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে র্যাংক করা হয়েছিল।
জামায়াতের ব্যবসায়িক বিস্তার
জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামীর নেতৃত্বে সিমেন্ট, টেলিকম এবং অন্যান্য ব্যবসা বিস্তার পায়।রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে ব্যবসার এই বিস্তার দেশের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
উন্নয়ন প্রকল্প স্থবির
পদ্মা সেতু,রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প ও বঙ্গবন্ধু টানেলসহ কিছু মেগাপ্রকল্প স্থগিত বা অনীহার কারণে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
সংক্ষেপে:
২০০১–২০০৬ সালের বিএনপি–জামায়াত সরকারের সময়ে দেশের রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল।তারেক রহমানের জেল,মুচলেকা দিয়ে দেশত্যাগ এবং দেশের দুর্নীতির ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়া সেই সময়ের উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

















