অপরাধ-আইন-আদালত

ঢাবি শিবির নেতার কক্ষ থেকে উদ্ধার প্রথম আলোর চুরি হওয়া ল্যাপটপ

  প্রতিনিধি ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৩:০০:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাবি শিবির নেতার কক্ষ থেকে উদ্ধার প্রথম আলোর চুরি হওয়া ল্যাপটপ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা ও চুরির ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের শিবির নেতার কক্ষ থেকে প্রথম আলোর চুরি হওয়া একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে—এমন দাবি করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

পুলিশ ও ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে,প্রাথমিক অনুসন্ধানে উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপটির সিরিয়াল নম্বর ও কনফিগারেশন প্রথম আলোর হারানো ডিভাইসের সঙ্গে মিলে গেছে।বিষয়টি নিশ্চিত করতে ফরেনসিক যাচাই প্রক্রিয়া চলছে।

কোথা থেকে,কীভাবে উদ্ধার

সূত্র জানায়,ঢাবির একটি আবাসিক হলের এক শিবির নেতার ব্যবহৃত কক্ষ থেকে ল্যাপটপটি উদ্ধার করা হয়।অভিযানের সময় কক্ষটি তালাবদ্ধ ছিল এবং পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে তালা খোলা হয়—এমন দাবি করা হয়েছে।

এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন,“উদ্ধারকৃত ডিভাইসটি প্রথম আলোর চুরি হওয়া ল্যাপটপ বলেই প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে।ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।”

প্রথম আলো হামলা: কাকতাল নয়, যোগসূত্র?

১৮ ডিসেম্বর রাতে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা,ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই চুরি হওয়া ডিভাইসগুলো কোথায় গেল—তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল।

এখন ঢাবি ক্যাম্পাসে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার কক্ষ থেকে ল্যাপটপ উদ্ধার হওয়ার খবরে হামলার নেপথ্যে সংগঠিত নেটওয়ার্কের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আইনি বিশ্লেষণ: কী অপরাধ দাঁড়াতে পারে

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে,অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে সম্ভাব্য ধারাগুলো হতে পারে—দণ্ডবিধি ৩৭৯/৪১১: চুরি ও চোরাই মাল দখলে রাখা,দণ্ডবিধি ৪৩৫/৪৩৬: অগ্নিসংযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে,দণ্ডবিধি ১২০বি: ফৌজদারি ষড়যন্ত্র।

ডিজিটাল নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আইন: সাংবাদিকতার তথ্য চুরি ও অপব্যবহার

এক সিনিয়র আইনজীবীর মন্তব্য,“মিডিয়া হাউসে হামলার ঘটনায় চুরি হওয়া ডিভাইস যদি রাজনৈতিক ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কে পাওয়া যায়,তাহলে তদন্তকে অবশ্যই ষড়যন্ত্রের দিকে নিতে হবে।”

শিবির নেতার পরিচয় ও বক্তব্য

উদ্ধারকৃত কক্ষটি যে শিবির নেতার—তাঁর নাম ও পরিচয় তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছে সূত্র। অভিযুক্ত পক্ষের বক্তব্য জানতে চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে শিবিরপন্থী কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে, “কক্ষটি ব্যবহার করতেন আরও কয়েকজন; রাজনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে।”

প্রশ্ন উঠছে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে

গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের মতে,এখন মূল প্রশ্নগুলো হলো—

চুরি হওয়া ল্যাপটপ ক্যাম্পাসে গেল কীভাবে?

হামলার পরিকল্পনাকারী কারা?

এটি কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা,নাকি মিডিয়া-বিরোধী সংগঠিত তৎপরতা?

উপসংহার

ঢাবির একটি হল কক্ষ থেকে প্রথম আলোর চুরি হওয়া ল্যাপটপ উদ্ধার—এই তথ্য সত্য প্রমাণিত হলে তা শুধু একটি চুরির ঘটনা নয়,বরং গণমাধ্যমের ওপর হামলার নেপথ্যে থাকা শক্তির মুখোশ উন্মোচনের সূচনা হতে পারে।

এখন রাষ্ট্র ও তদন্ত সংস্থার সামনে একটাই দায়িত্ব—
নিরপেক্ষ,সাহসী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্ত।

নইলে প্রশ্ন থেকে যাবে—
👉 মিডিয়ায় হামলার আলামত কারা লুকাচ্ছিল,আর কেন?

আরও খবর

Sponsered content