রাজনীতি

তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারলেও আর বিদেশে যেতে পারবেন না—জেল ও সর্বোচ্চ শাস্তির ঝুঁকি আছে: ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলাম

  প্রতিনিধি ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৮:৩৩:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারলেও এরপর আর বিদেশে যেতে পারবেন না—এমন মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলাম।তিনি আরও বলেন,ভবিষ্যতে বিভিন্ন মামলার পরিণতিতে তারেক রহমানকে কারাবাসে থাকতে হতে পারে এবং সর্বোচ্চ শাস্তির ঝুঁকিও আইনি কাঠামোয় বিদ্যমান।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তীব্র।একদিকে বিএনপি বলছে,তারেক রহমান একজন রাজনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার নেতা; অন্যদিকে সরকারপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা দাবি করছেন—তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন ও দণ্ডপ্রাপ্ত মামলাগুলো এখনো কার্যকর অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এই ইস্যু নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ সৃষ্টি করেছে।

ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলামের বক্তব্য

ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলাম বলেন,

> “তারেক রহমান দেশে ঢুকতে পারলেও আইনগত কারণে তিনি দেশ ছাড়তে পারবেন না।আদালতের দণ্ড ও বিচারাধীন মামলাগুলোর কারণে তার চলাচল সীমাবদ্ধ থাকবে।আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে এবং মামলার প্রকৃতি ও রায়ের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ শাস্তির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন,দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার ও জামিন প্রশ্নে আদালতের এখতিয়ার কার্যকর হবে এবং আগের দণ্ডাদেশ ও আপিলের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আইনি বিশ্লেষণ

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে,বিষয়টি কয়েকটি স্তরে বিবেচ্য—

1. দণ্ড ও বিচারাধীন মামলা:
ফৌজদারি কার্যবিধি (CrPC) অনুযায়ী,দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বা সাজা স্থগিত না থাকলে গ্রেপ্তারযোগ্য থাকেন।দেশে প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট আদালতের আদেশ কার্যকর হতে পারে।
2. ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা:
আদালত দণ্ডপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন আসামির ক্ষেত্রে পাসপোর্ট জব্দ,দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন।ফলে দেশে ঢুকলেও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নাও থাকতে পারে।

3. জামিন ও আপিল:
তারেক রহমান দেশে ফিরে জামিন চাইতে পারবেন—এটি তার সাংবিধানিক অধিকার।তবে জামিন দেওয়া হবে কি না,তা মামলার ধরন,দণ্ডের মাত্রা ও আদালতের বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে।

4. সর্বোচ্চ শাস্তির প্রসঙ্গ:
আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান কেবল নির্দিষ্ট অপরাধে প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত রায়,সাক্ষ্যপ্রমাণ ও আপিলের ফলাফলের ওপরই সবকিছু নির্ভরশীল—এটি কোনো স্বয়ংক্রিয় বা নিশ্চিত বিষয় নয়।

পাল্টা মত ও রাজনৈতিক অবস্থান

বিএনপি নেতারা ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলামের মন্তব্যকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যাখ্যা” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের দাবি,তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল এবং আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার পেলে তিনি মুক্তভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন।

তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক ও আইনি—দুই ক্ষেত্রেই বড় ঘটনা হবে।ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলামের বক্তব্য আইনি ঝুঁকির দিকটি সামনে আনলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে আদালতের আদেশ,চলমান আপিল ও বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর।ফলে বিষয়টি এখনো আইন ও রাজনীতির সংযোগস্থলে থাকা একটি চলমান বাস্তবতা—যার পরিণতি নির্ধারণ করবে আদালতই।

আরও খবর

Sponsered content