সম্পাদকীয়

ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সম্ভাব্য প্রভাব

  প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ২:২৯:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি অত্যন্ত জটিল ও সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত।২০২৫ সালের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন পদক্ষেপের প্রভাবগুলো নিম্নরূপ বিশ্লেষণ করা যায়:

১. অর্থনৈতিক প্রভাবঃবাণিজ্যিক ক্ষতি: ভারত বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার।তুলা,সুতা,খাদ্যপণ্য ও শিল্প কাঁচামালের আমদানি ব্যাহত হলে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য খাত সংকটে পড়তে পারে।বিকল্প উৎস থেকে আমদানিতে খরচ বেড়ে বাজারে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে পারে।

ট্রানজিট ও কানেক্টিভিটি: ভারতের মাধ্যমে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হবে,যা সরাসরি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

২. জনজীবনে প্রভাব,ভিসা ও যাতায়াত: চিকিৎসা বা উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে যান। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হলে ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যাবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: ভারতের কাছ থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ ও কয়লাভিত্তিক জ্বালানি বন্ধ হলে দেশ জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে এবং লোডশেডিং বৃদ্ধি পেতে পারে।

৩. রাজনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব সীমান্ত নিরাপত্তা: সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান রোধে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর নিয়মিত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক চাপ:ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিন্ন হলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে সন্দিহান হতে পারে।

৪. নদী ও পানি বণ্টনঃতিস্তা চুক্তিসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চলমান আলোচনাগুলো স্থবির হয়ে যাবে। এর ফলে শুষ্ক মৌসুমে উত্তরবঙ্গ পানিশূন্যতায় এবং বর্ষায় বন্যার ঝুঁকি বাড়বে।

সারসংক্ষেপঃ
বিশেষজ্ঞরা কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা পদক্ষেপকে প্রায়ই ‘অর্থনৈতিক আত্মঘাতী’ (Economic Self-harm) হিসেবে বিবেচনা করেন।বৈরিতা বা অমীমাংসিত সমস্যা থাকলেও আলোচনার পথ খোলা রাখা আধুনিক কূটনীতির মূল সুত্র এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

আরও খবর

Sponsered content