প্রতিনিধি ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪:১৩:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।বাংলাদেশ ডিম ও মুরগি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে ডিম আমদানি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।তিনি বলেন,ডিম আমদানি নয়,বরং ডিম ও মুরগি রফতানি করার সময় হয়েছে আমাদের।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ডিম ও মুরগির দামে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেট এবং ডিম আমদানি বন্ধ করার দাবি সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন সুমন হাওলাদার।
তিনি বলেন,আজ ডিম ও মুরগি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ।আমাদের দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে ৫ কোটি পিস।তাই ডিম আমদানি নয়,বরং ডিম ও মুরগি রফতানি করার সময় হয়েছে আমাদের।
পোলট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫০ থেকে ৬০ লাখ উদ্যোক্তা জড়িত জানিয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানান,কাজেই কর্মসংস্থান রক্ষার তাগিদে ডিম আমদানি বন্ধ করতে হবে এবং প্রান্তিক খামারিদের লসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
দেশের বাজারে ডিমের দাম বেশি কেন,তা তদারকি করে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমিয়ে,ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ কমিয়ে দাম কমানো সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
ভারতের বাজারে ডিম ও মুরগির দাম—–
এসময় ভারতের ডিম ও মুরগির বাজারের উদাহরণ টেনে সুমন হাওলাদার বলেন,ভারতে ৫০ কেজির ১ বস্তা ব্রয়লার ফিডের দাম বাংলাদেশি ২ হাজার ৭০০ টাকা,১ বস্তা লেয়ার ফিডের দাম ১ হাজার ৮৭৫ টাকা,১টি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ২৮ টাকা এবং ১টি লেয়ার বাচ্চার দাম ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা।তাই সেখানে একটি ডিম উৎপাদন করতে বাংলাদেশি মুদ্রায় খরচ হয় ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা।ফলে ভারতের বাজারে একটি ডিম বিক্রি হয় ৭ টাকা থেকে সাড়ে ৭ টাকায়।সেখানে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হওয়ার বিক্রি হয় ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা।যেহেতু তাদের উৎপাদন খরচ কম,তাই তারা কম দামে বিক্রি করেও লাভ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন,অন্যদিকে বাংলাদেশের বাজারে ১ বস্তা (৫০ কেজি) ব্রয়লার ফিডের দাম ৩ হাজার ৫০০ টাকা,১ বস্তা (৫০ কেজি) লেয়ার ফিডের দাম ২ হাজার ৯০০ টাকা, ১টি ব্রয়লার বাচ্চার দাম ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা এবং ১টি লেয়ার বাচ্চার দাম ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা।বাংলাদেশে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা থেকে ১১ টাকা এবং ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬৭ টাকা।
মুরগির বাচ্চার দাম বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় মন্তব্য করে সুমন হাওলাদার বলেন,ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ।এক্ষেত্রে সরকারের তদারকি করে সমস্যা বের করে সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে।
পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমানো না গেলে ডিম ও মুরগির দাম কখনোই কমবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন,ডিম ও মুরগির দাম কমাতে আমদানির সিদ্ধান্তের ফলে দেশীয় শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।এতে খাত আমদানি নির্ভর হয় উঠবে। পরবর্তীতে ঠিকই বেশি দামে কিনে খেতে হবে অথবা টাকা থাকলেও ডিম ও মুরগি পাওয়া যাবে না।
তাই আমদানি বন্ধ করে দেশীয় উৎপাদনকে কীভাবে ধরে রাখা যায়,সেই চেষ্টা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুমন হাওলাদার বলেন,প্রান্তিক খামারিদেরকে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে হবে।সেই সঙ্গে তাদেরকে বাজার প্রতিযোগিতায় রাখতে হবে।
ডিম আমদানি না করে করপোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে প্রান্তিক খামারিদের জন্য পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চা আমদানি করার ব্যবস্থা করার দাবি করে তিনি বলেন,এতেই ডিম ও মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে।
এর আগে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে ভোক্তার হাতে ডিম পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পর দুই দফায় ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।













