প্রতিনিধি ১০ এপ্রিল ২০২৫ , ১১:৩৪:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।। গ্রামীণের লোণ অফিসাররা ঋণগ্রহীতাদের বেশি বেশি করে ধার নিতে বলেন বলে বর্ডেন লিখেছেন। এবং,ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট,যে গ্রামীণ থেকে অল্প পরিমাণ ঋণ নিলে তার আর্থিক বোঝা ঋণের পরিমাণের তুলনায় ভয়াবহ। গ্রামীণের জিএফএ থেকে ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ধার ইত্যাদি নিয়ে অবস্থানের কাগজে-কলমে কিছু বদল হলেও শাখাগুলিতে তার বিশেষ প্রভাব পড়েনি বলেই বিভিন্ন গবেষকের মত।বাস্তবিক,গ্রামীণ থেকে যাঁরা ঋণ নেন তাঁরা অনেকেই জানেন না,এই জটিল প্রক্রিয়াতে তাঁদের কী অধিকার আছে,কী তাঁরা পেতে পারেন।তার সাথে, জিএফএ থেকে টাকা তোলা যাবে কি যাবে না তা নিয়ে শেষ কথা বলেন গ্রামীণের অফিসাররা। ১৯৯৮ সালে এই জিএফএ-তে রাখা টাকা ছিল গ্রামীণের মোট ঋণের ৩৮%, অর্থাৎ ঋণগ্রহীতাদের দেওয়া ঋণের টাকার ৩৮% তাঁদের নিজেদেরই টাকা,যা তোলার অধিকার নেই তাঁদের। এবং,গ্রুপের কোনও একজন ঋণ শোধ দিতে না পারলে গোটা গ্রুপের জিএফএ-র টাকা আটকে দেন গ্রামীণের অফিসাররা,কিছু গবেষক এমনও দাবি করেছেন।

গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল,তাদের বেশীরভাগ ঋণ শোধ হয়ে যায়।২০০১ সালে ওয়াল স্ট্রীট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়,গ্রামীণের ‘৯৫% লোন রিপেমেন্ট রেট’- এর দাবিতে জল আছে।গ্রামীণ বেশ কিছু ঋণকে ‘ফ্লেক্সিবল লোন’-এ পরিণত করে।যেমন,এক মহিলা সাপ্তাহিক ২০০ টাকা সুদ দিতে পারছিলেন না।তাগাদা দিয়েও কিছু লাভ হয়নি।তখন গ্রামীণ তাঁকে বলে,আগামী ছয় মাস সপ্তাহে ৫০ টাকা সুদ দিতে,আর তার শেষে আগে যা শোধ দিয়েছিলেন তার দ্বিগুণ ঋণ নিতে। তিনি রাজি হয়ে যান।কিন্তু এধরণের পলিসিতে ধারের বোঝা ক্রমশ বেড়েই চলে,যে ধারঋণগ্রহীতারা কোনোদিন পুরো শোধ দিয়ে উঠতে পারবেন না।
ওপরের আলোচনা থেকে যে জিনিসটা স্পষ্ট হওয়া উচিত, সেটা হল,গ্রামীণের ঋণগ্রহীতাদের ঋণের মাত্রা সময়ের সাথে সাথে বাড়াটাই নিয়ম।গ্রামীণের কর্মকর্তারাও সেটাই চান।কারণ সত্যি বলতে,চড়া সুদে ক্ষুদ্র-ঋণ দিয়ে দারিদ্র্য ঘোচানো যায় না। জনসাধারণের দরিদ্রতম অংশের থেকে লাভ করা যেতে পারে,স্থানীয় মহাজনদের বদলে আটঘাট বাঁধা ব্যাঙ্ক আসতে পারে,কিন্তু এতে ঋণের জালে বেশি বেশি করে জড়িয়ে পড়া ছাড়া দরিদ্রতম অংশটির বিশেষ কিছু হয় না।এবং এই কথা নতুন কিছু নয়।বরং এর উল্টোটা বলাই মিথ্যাচার।যে মিথ্যাচার বছরের পর বছর ধরে ইউনুস সাহেব এবং তাঁর ক্ষমতাশালী বন্ধুরা করে গেছেন।ইউনুসের মডেলকে বৈধতা দেওয়ার জন্য তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে,যা ওবামার মত যুদ্ধবাজও পেয়েছেন।দেশের যাবতীয় সম্পদ ও ক্ষমতা কিছু লোকের কাছে কুক্ষিগত থাকবে,তাঁদের কাছে বাকিদের দরবার করতে হবে একটু স্বাচ্ছল্যের জন্য,এ ব্যবস্থা ঋণ দিয়ে শোধরাবার নয়।সেখানে দরিদ্রতম অংশটির সাথে সুদের ব্যবসাকে দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রক্রিয়া বলে চালানো শুধু মিথ্যা প্রচার নয়,ঘৃণ্য অপরাধ।










