জাতীয়

সরকারি চাকরিতে সর্বনিম্ন ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেতন বাড়তে পারে

  প্রতিনিধি ১০ জানুয়ারি ২০২৫ , ৪:০০:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

0Shares

অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবের খসড়া চূড়ান্ত করেছে, যা অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ১ থেকে ৩ নম্বর গ্রেডে মহার্ঘ ভাতা হবে মূল বেতনের ১০ শতাংশ,৪ থেকে ১০ নম্বর গ্রেডের চাকরিজীবীরা পাবেন ২০ শতাংশ, আর ১১ থেকে ২০ নম্বর গ্রেডধারীরা ২৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন।এতে সর্বনিম্ন ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেতন বাড়তে পারে।  স্কেলের পার্থক্যের কারণেও কেউ ৪ হাজার টাকার কম মহার্ঘ ভাতা পাবেন না।

তবে মহার্ঘ ভাতা কার্যকর হওয়ার পর আগের সরকারের দেওয়া ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধাটি আর বহাল থাকবে না বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।তারা আরও জানিয়েছেন,পেনশনে থাকা কর্মকর্তা-কমর্চারীরাও মহার্ঘ ভাতা পাবেন।

সরকারপ্রধানের কাছে বেতন বা ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ ক্ষেত্রে বাড়তি অর্থের উৎস উল্লেখ করতে হয়।অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাজস্ব খাতে ব্যয় কমানো খুবই কঠিন,তাই সবকিছু উন্নয়ন বাজেটের ওপর নির্ভর করবে।উন্নয়ন বাজেট কিছুটা কমিয়ে সেই অর্থ দিয়ে বর্ধিত বেতনভাতা দেওয়া হবে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী,সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গেই মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হতে পারে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার এ অর্থবছরই মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।তিনি বলেছেন,আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হবে। তবে কত শতাংশ মহার্ঘ ঘোষণা করা হবে,সে বিষয়ে কিছু জানাননি জনপ্রশাসন সচিব।’

জনপ্রশাসন সচিব আরও বলেন,মহার্ঘ ভাতা নিয়ে দুটি সভা হয়েছে।এবার যারা পেনশনে গিয়েছেন তাদেরও মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে।যারা মহার্ঘ ভাতা পাবেন,ইনক্রিমেন্টের সময় সেই ভাতা বেসিকের সঙ্গে যোগ হবে।কত শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে? এ প্রশ্নের জবাবে মহার্ঘ ভাতা পর্যালোচনা কমিটির এ সদস্য অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

সরকারি কর্মচারীদের সর্বশেষ পে-স্কেল দেওয়া হয় ২০১৫ সালে।এরপর আর বেতন বাড়েনি তাদের।অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে।চাকরিজীবীদের দৈনন্দিন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মূল বেতনের সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরিজীবীদের দাবি ছিল মহার্ঘ ভাতার।এরই পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার মহার্ঘ ভাতা নির্ধারণে কমিটি গঠন করে। কমিটি বিষয়ে অর্থ বিভাগের জারি করা আদেশে বলা হয়েছিল, সরকারি কাজে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল,২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ করার জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির কার্যপরিধি ছিল মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করা এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে কমিটি।

সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর একটি নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করে সরকার।কিন্তু ২০১৫ সালের পর আর কোনো নতুন পে-স্কেল দেওয়া হয়নি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়। সর্বশেষ পে-কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন।তিনি নতুন পে-কমিশন না করে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বেতন কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন।কিন্তু আগের সরকার এ সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে বেতন বাড়াতে নতুন পে-স্কেল ঘোষণাসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছিলেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী,সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়,বিভাগ,অধিদপ্তর,দপ্তর,করপোরেশন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৪ লাখ কর্মচারী কর্মরত।চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তাদের বেতনভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। বাজেটে মহার্ঘ ভাতায় কোনো বরাদ্দ নেই। তবে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ হার চূড়ান্ত করে পরিচালন বাজেটের অন্য খাতের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

0Shares

আরও খবর

Sponsered content

0 Shares