আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বারাক ওবামার বন্ধু

  প্রতিনিধি ৫ জুলাই ২০২৪ , ৬:১৩:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয়ের পর যুক্তরাজ্যের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডেভিড ল্যামি।নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শুক্রবার তাঁর নাম ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।কৃষ্ণাঙ্গ এই লেবার নেতার আরেকটি পরিচয় রয়েছে,তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বন্ধু।

৫১ বছর বয়সী ডেভিড ল্যামির পূর্বপুরুষ লাতিন আমেরিকার গায়ানায় ক্রীতদাস ছিলেন।সেই পরিবার থেকেই যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের একজন হয়ে উঠেছেন তিনি। সম্প্রতি এক ভাষণে ল্যামি বলেছিলেন,দাস ব্যবসার শিকার পরিবারের উত্তরসূরি হিসেবে আমি প্রথম যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছি।এ দায়িত্ব গুরুত্বের সঙ্গে পালন করব।’

ডেভিড ল্যামি দুই বছরের বেশি সময় ধরে লেবার পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।এ সময়ে ৪০ বারের বেশি বিদেশ সফর করেছেন বলে দাবি তাঁর।যুক্তরাজ্যের কূটনীতির জন্য একটি মডেলও দাঁড় করিয়েছেন এই লেবার নেতা।এর নাম দিয়েছেন ‘প্রগতিশীল বাস্তববাদ’।

লেবার পার্টির খ্যাতনামা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নেস্ট বেভিনের বাস্তবভিত্তিক নীতির সঙ্গে আরেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিন কুকের নৈতিক আদর্শবাদকে মিলিয়ে এই মডেল তৈরি করেছেন ল্যামি।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সামরিক জোট ন্যাটো গঠনে ভূমিকা রেখেছিলেন বেভিন।যুক্তরাজ্যকে পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ার পথেও এগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।আর কসোভো ও সিয়েরা লিওনে ব্রিটিশ বাহিনীর অভিযান সফলভাবে দেখভাল করেছিলেন রবিন কুক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গভীর করার পক্ষে ডেভিড ল্যামি।ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে আসার পর এর সমালোচনাও করেছিলেন তিনি।এ ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি বরাবরই ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছেন।মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রও চান তিনি।

ভুল বুঝেছিলেন ট্রাম্পকে

ডেভিড ল্যামির জন্ম ১৯৭২ সালে, লন্ডনে। তাঁর মা-বাবা দুজনই গায়ানা থেকে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন।ল্যামির বয়স যখন মাত্র ১২ বছর,তখন স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানকে ছেড়ে চলে যান তাঁর বাবা।এরপর কখনো বাবাকে দেখেননি তিনি। তাঁর বেড়ে ওঠা উত্তর লন্ডনের টটেনহামে।২০০০ সাল থেকে পার্লামেন্টে এই এলাকার প্রতিনিধিত্বও করছেন।এখান থেকেই মাত্র ২৭ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন ল্যামি।সে সময় তিনি ছিলেন পার্লামেন্টের সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য।এরপর প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।রক্ষণশীল কনজারভেটিভ পার্টি যুক্তরাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালে এত দিন ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ল্যামি।

আশা দিচ্ছেন স্টারমার গত শতকের নব্বইয়ের দশকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ল স্কুলে ভর্তি হন ডেভিড ল্যামি।ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণাঙ্গ অ্যালামনাইদের একটি অনুষ্ঠানে বারাক ওবামার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তাঁর।২০০৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামার প্রচার-প্রচারণা নিয়ে একাধিক ছবি এঁকেছিলেন ল্যামির স্ত্রী নিকোলা গ্রিন।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দেন ল্যামি।ওবামার বন্ধু হওয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তাঁর।তবে গত মে মাসে ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে বলেছিলেন,আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় পেলে তাঁর সঙ্গেও কাজ করতে রাজি তিনি।

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে এআই প্রার্থীর ভরাডুবি
একসময় ট্রাম্পকে ‘নারীবিদ্বেষী’ ও ‘নব্য নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিশীল’ আখ্যা দিয়েছিলেন ল্যামি।সেই তিনিই সম্প্রতি বলেছেন,ট্রাম্পকে ভুল বুঝেছিলেন তিনি।তাঁর কথায়,বড় নির্বাচনের একটি বছরে ‘হোয়াইট হাউসে বা ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে যে-ই ক্ষমতায় থাকুন না কেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

আরও খবর

Sponsered content