শিক্ষা

শ্রীপুর হাইস্কুলে কোচিং বাধ্যতামূলক করে টাকা নিয়েছে শিক্ষকরা-জাতীয় সংগীতের অবমাননা সহ রাষ্ট্র বিরোধী স্ট্যাটাস স্কুলের ফেসবুক পেইজে—!!

  প্রতিনিধি ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১:৪৫:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর মহিষা ওহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।

অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই যেন কারো!তাই দূর্নীতি ও অনিয়মের বরপুত্র হয়ে গেছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা।ক্লাশ রুমকে বাসা-বাড়ি বানিয়ে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বসবাস করছেন ৩ শিক্ষকের পরিবার।স্কুলের মাঠে-বারান্দা ছোট ছোট পোশাক রোদে শুকানো হয়।এরফলে কচি-কাচা শিক্ষার্থী যৌনতা সুড়সুড়ি লাগছে।স্কুলের গুটিকয়েক শিক্ষকদের কারণেই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। সকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত কোচিং বাণিজ্য চলছে—! এছাড়াও শ্রীপুর মহিষা ওহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ফেসবুক পেইজে জাতীয় সংগীতের অবমাননা করা হয়েছে। এমনকি সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। স্বাধীনতা বিরোধী দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর ছবি সহ একাধিক স্ট্যাটাস শেয়ার করা হয়েছে।

বাহের চর গ্রামের মেম্বার নোমান মোল্লা আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে কল করে অভিযোগ করে বলেন,রাত ৭টা বাজছে,এখন নবম-দশম শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রী কোচিং শেষে বাড়ি ফিরতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম,তারা জানান সুশান্ত মাষ্টারের কাছে কোচিং শেষে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।এই জনপ্রতিনিধির অভিযোগ ইতিমধ্যে বেশকয়েকটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।এক ছাত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে।এর দায়ভার কে নেবে?

‘বিশেষ’ ক্লাসের নামে কোচিং বাধ্যতামূলক করে নিজেদের ইচ্ছেমতো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।কোচিং বন্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিমালা থাকলেও তা মানতে না রাজি নয় শ্রীপুর হাইস্কুলের কয়েকজন শিক্ষক!

শ্রীপুর কোচিং বাণিজ্যকে বৈধ করতে নাম দিয়েছে বিশেষ ক্লাস।কোন শিক্ষার্থী বিশেষ ক্লাস করতে না চাইলে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়।বিশেষ ক্লাস না করলে তাকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে দেবে না।এই ভয়ে কোন শিক্ষার্থী ভয় ও আতংকে মুখ খুলে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীপুর মহিষা ওহেদিয়া মাধ্যমিক নবম-দশম শ্রেণী ও অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের নামে কোচিং করতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।নবম-দশম শ্রেণীতে ফি জনপ্রতি ৬০০টাকা।নবম -দশম শ্রেণীর মোট ৫০০জন শিক্ষার্থী ও অষ্টম শ্রেণীর প্রায় ২৫০জন শিক্ষার্থী বিশেষ ক্লাসে অংশ গ্রহণ করছে।আর তাদের ফি জন প্রতি ৫০০টাকা। তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে প্রধান শিক্ষক ও তার অনুগত কয়েকজন শিক্ষক!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীপুর হাইস্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, প্রতিমাসে ছয় থেকে সাত লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ওখান থেকে কিছু টাকা কর্মকর্তার পকেটে যায়।বাকি টাকা প্রধান শিক্ষক ও তার সিন্ডিকেটের শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

শিক্ষার্থীরা বলেছেন,কেউ বিশেষ ক্লাসের টাকা দিতে না চাইলে তাকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করা হয়।

শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার ছেলে মোঃ তানভীর আহমেদ তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি শ্রীপুর এর সচেতন নাগরিক ও শ্রীপুর বানঘাট নাগরিক ফোরাম এবং নিজস্ব পেইজে শ্রীপুর মহিষা ওহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে একাধিকবার স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবুও টনড় নড়েনি!

এব্যাপারে শিক্ষক সুশান্ত কুমার কথা বলতে রাজি হননি।

শ্রীপুর মহিষা ওহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ গিয়াস উদ্দীন খান এর বক্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার কল করলেও পাওয়া যায়নি। ্স্কুলের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের পর বক্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার টেক্সট ম্যাসেজ পাঠানোর পর রিপ্লাই পাওয়া যায়নি।

শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শ্রীপুর হাইস্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার বক্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে কল লাইন কেটে দেন।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা অফিসার তপন কুমার জানান, দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠেছে,তবে নদী পরিবেষ্টিত শ্রীপুর ইউনিয়নটি কালাবদর নদীর ভাঙ্গন কবলগ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। শ্রীপুর হাইস্কুলটি নদীর তীরে অবস্থিত। যেকোনো সময় নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।ওই এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানদের সাথে শিক্ষকের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছেন।এসব অভিযোগ বরদাস্ত করা হবে না।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মোঃ আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সুপ্রিমকোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান জানান,আদালতের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের নীতিমালা বৈধ ঘোষণা করায় এ বাণিজ্য বন্ধ হলো।এ কারণে ক্লাসে পাঠদানের বাইরে মাসে ১৭৩ টাকা করে যে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার বিধান করা হয়েছে তার বাইরে কোনো কোচিং করাতে পারবেন না শিক্ষকরা।গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট আরেকটি রায়ে বলেন,শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের পড়ানোর ব্যর্থতার কারণেই কোচিং বাণিজ্য হচ্ছে।কোচিং বাণিজ্যকে নতুন ধরনের অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

এবিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জেলা-উপজেলা জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষা অফিসার,ডিসি,শিক্ষা সচিব,শিক্ষামন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ভূক্তভোগীরা।

বিস্তারিত আসছে——-জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হবে—–;

আরও খবর

Sponsered content