চাকরির খবর

একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে কৃষিকাজ শুরু করা বাদশা মিয়ার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে-ইউএনও

  প্রতিনিধি ২ জুন ২০২৩ , ১:৪৮:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ডিমলা উপজেলা প্রতিনিধি।।চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে কৃষিকাজ শুরু করা বাদশা মিয়ার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়েত হোসেন।মঙ্গলবার (৩০ মে) বাদশাকে নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হলে ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।এসময় তিনি বাদশা মিয়ার কর্মসংস্থানের বিষয়ে জানান।

মো. বেলায়েত হোসেন বলেন,বাদশা মিয়ার বিষয়টি প্রথম সামনে আসলে সেসময় আমাদের তত্ত্ববধানে তার একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল।কিন্তু তিনি সে চাকরি ছেড়ে চলে আসার বিষয়টি জানা ছিল না।এখন তিনি যদি চান তাহলে তাকে আইসিটি কিংবা অন্য কোনো বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হবে।পরবর্তীতে সেই দক্ষতাভিত্তিক চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের ধানক্ষেতে দেখা হয় বাদশা মিয়ার সঙ্গে।তীব্র রোদ উপেক্ষা করে নিজের জমির ধান কেটে কাঁধে নিয়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসছেন ওই যুবক।বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে মাঠের কাজে সহযোগিতা করছেন।এদিন গণমাধ্যমে বাদশাকে নিয়ে এ সংবাদ প্রকাশের ফের চর্চা শুরু হয়।

বাদশা মিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে।অভাবের সংসারে ছয় ভাই–বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০১৪ সালে তিনি নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন।তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি।

জানা যায়,বাদশা ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল,২০০৯ সালে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে আলিম এবং ২০১৪ সালে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ২.৬৬ জিপিএ নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

বাদশা মিয়া বলেন,আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন।বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাইবোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না।বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলে।এরা না পারে চাকরি জোটাতে,আবার অর্থের অভাবে না পারে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে।তাই চুপিসারে ঢাকা ও বগুড়া শহরে প্রায় সময়ে রিকশা চালিয়ে উপার্জন করেছি।

ইউএনও বেলায়েত হোসেন বলেন,বাদশা মিয়াকে আমার কার্যালয়ে ডাকা হবে।তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। প্রথমে আমরা তার কথাগুলো শুনবো।আমাদের পক্ষ থেকে তার জন্য যে প্রস্তাবগুলো রয়েছে; সেগুলো তাকে জানাবো। তিনি আগ্রহী হলে আমরা সামনে আগাবো।আমরাও চাই, তার একটি স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হোক।

এর আগে, গত ২৩ মে ফেসবুক লাইভে এসে ইডেন কলেজের মুক্তা সুলতানা নামে এক ছাত্রী নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন।

এ সময় সার্টিফিকেটগুলো চাকরির জন্য কোনো কাজে লাগছে না বলে জানান তিনি।তার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়।বিষয়টি নজরে আসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও।এরপর তাকে এই মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজেক্টে কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content