রাজনীতি

হাদির ওপর হামলা এটি বৃহৎ এক চক্রান্তের ক্ষুদ্র অংশ-মির্জা আব্বাস

  প্রতিনিধি ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৭:৪০:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন,শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলা এটি বৃহৎ এক চক্রান্তের ক্ষুদ্র অংশ।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস।চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর এবং ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষণার পরদিন শুক্রবার ঢাকার সড়কে প্রকাশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছিলেন।মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।এর আগে গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে গণসংযোগের সময় গুলি করা হয় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহকে।

প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন,এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়।এর আগে চট্টগ্রামে এরশাদ উল্লাহর ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল।এবার হাদির ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।এটা বৃহৎ চক্রান্তের ক্ষুদ্র একটি অংশ।সামনে আরও চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র প্রকাশ পাবে।

ওসমান হাদিকে গুলি করার মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার,সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন,এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে।এই অপশক্তির কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে।যাঁরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন,তাঁরা সাবধান হয়ে যান।

সন্তানের বয়সী একজন ছেলেকে মির্জা আব্বাস আঘাত করবেন,এটা অকল্পনীয়।তিনি হঠাৎ করে রাজনীতিবিদ হননি। তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ৫০ বছরের।

হাদির ওপর গুলির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত দাবি করেন মির্জা আব্বাস।ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্টকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন,‘হাদির গায়ে গুলি লেগেছে সোয়া দুইটায়।ঠিক আড়াইটার সময় ফেসবুকে পোস্ট আসলো,সবাই যে যেখানে আছো,ঐক্যবদ্ধ হও।কোনো একটা বাসায় যেতে হবে,ইট খুলে নিয়ে আসতে হবে।ভাবতে পারছেন ব্যাপারটা কত পরিকল্পিত।’

ওসমান হাদি যে আসনে প্রার্থী হতে চাইছেন,সেই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস।শুক্রবার গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন মির্জা আব্বাস।তাঁর উদ্দেশে আক্রমণাত্মক স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।

সেই প্রসঙ্গ তুলে সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন,আমি ভাই ঢাকার ছেলে।আমি ঢাকার রাজপথে মিছিল করে বড় হয়েছি। আমি ঢাকার রাজপথে আন্দোলন করে বড় হয়েছি।আমার বয়সটা একটু বেশি হয়ে গেছে।শান্ত থেকেছি,নীরব থেকেছি। কিন্তু ওই মুহূর্তে যদি আমার নির্দেশনা পেত,তাহলে তোমাদের তুলাধোনা করতে আমাদের ছেলেরা দেরি করত না।’

যারা আক্রমণাত্মক স্লোগান দিয়েছিল,তাদের কেউ ওসমান হাদির সমর্থক নয় দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন,এরা বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা ছিল। যারা সেখানে মব সৃষ্টি করেছিল,তারা চেয়েছিল হাদি ওখানেই মারা যাক।

সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,ওসমান হাদি সব সময় দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন।তিনি ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হয়েছেন।তবে কখনো মির্জা আব্বাস তাঁকে বিরক্ত করছেন,এমন কথা বলেননি।

ডাকসুর ভিপি,ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা সাদিক কায়েমের উদ্দেশে রাকসুর একসময়ের ভিপি রুহুল কবির বলেন, ‘আপনি এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে (হাদিকে গুলি করার) ফেসবুকে দিয়ে দিলেন।তার মানে কি ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনির মতো অবস্থা না? আপনি ঘোড়ার আগেই গাড়ি জুড়িয়ে দিলেন।’

হাদির ওপর হামলা সুপরিকল্পিত দাবি করে রুহুল কবির বলেন, এটা সুপরিকল্পিত একটা বিষয়।যাকে শনাক্ত করা হয়েছে,তাঁর ওপর আঘাতকারী,হাদির ওপর,সে ছাত্রলীগেরও নেতা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ভিপি (ডাকসু ভিপি) সাদিক কায়েমের সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছে।এখন এর বিচার কে করবে? এই কারণেই এই পরিকল্পিত নকশা করেছে ওই সংগঠনটি।’

ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব ও ঢাকা-৪ আসনে দলের প্রার্থী তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম,স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী ইশরাক হোসেন, ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী শেখ রবিউল আলম, ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী হাবিবুর রশীদ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

আরও খবর

Sponsered content