প্রতিনিধি ৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৪৭:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
সোনাগাজী (ফেনী)প্রতিনিধি।।ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে।পুড়ে গেছে আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অফিস সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টায় উপজেলার চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় পলাশ।
বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ির মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “ভোরে দুর্বৃত্তরা স্কুলে আগুন দেয়।পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে জানালে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।”
বিদ্যালয়ের কৃষিশিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম বলেন,আগুনে অফিস কক্ষে থাকা দুটি কম্পিউটার, বই,সব কাগজপত্র ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়।স্কুলের সাতটি আলমারির মধ্যে দুটি শতভাগ,অন্যগুলোর কাগজপত্র পুড়ে যায়।এছাড়া ২০টি চেয়ার,দুটি টেবিল,দুটি দরজা ও বই পুড়ে গেছে।
আগুনে শিক্ষক মিলনায়তনের অফিস কক্ষ পুড়ে গেলেও ভোটকেন্দ্রের কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়ের উল্যাহ বলেন,একতলা পাকা অফিস ভবনের উপর টিনশেডের দোতলা ক্লাসরুম রয়েছে।স্কুলটি ভোট কেন্দ্র হলেও আগুন লাগা ভবনে কোনো ভোটকক্ষ ছিল না।”
চর দরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু বলেন,আগুনের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের পিছনে অফিস কক্ষের জানালার পাশে দুই লিটারের একটি পানির বোতলে পেট্রোল পড়ে থাকতে দেখেছে।
তবে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদীন স্কুল ফান্ড থেকে ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অডিটকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করছে ম্যানেজিং কমিটি।
“অর্থ আত্মসাতের সব তথ্য স্কুলের দুটি আলমারিতে ছিল। প্রধান শিক্ষকের সাথে অফিস সহকারী আবদুর রহমান আজাদের সখ্যতা থাকায় তার নির্দেশে স্কুলের অফিস কক্ষের জানালা দিয়ে অকটেন ছুড়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। ”
সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাসলিম হোসাইন বলেন,স্কুল ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্দ্বে গত ৭ মাস ধরে প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে সাসপেন্ডে রয়েছে। তার অনুসারী অফিস পিয়ন ছুটির দিনে ভোর ৬টায় কেন স্কুল আঙিনায় এসেছে এটি রহস্যজনক।পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনাটি স্কুল কমিটির দ্বন্দ্ব না নির্বাচন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সহিংসতা তা তদন্ত করা হচ্ছে।পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি,পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ”
তবে অভিযোগের বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদীন মোবাইল ফোনে বলেন,তার বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে,তিনি তা নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছেন।
বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান জানান,থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তবে নির্বাচনের দিন এ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীর চারটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দেওয়া ঘটনা ঘটে।