প্রতিনিধি ৭ জানুয়ারি ২০২৪ , ১:৫৫:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৯৯টি আসনের ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্রে একযোগে চলে ভোটগ্রহণ। এখন চলছে ভোট গণনা।
তবে বেলা ৪টার পরেও যদিও কেন্দ্রের ভেতরে ৪০০ গজের বেষ্টনীর ভেতর থাকা কোন ভোটার অপেক্ষমাণ থাকলে, তার ভোট গ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৪টা পর্যন্ত ওই ৪০০ গজের ভেতরে থাকা প্রতিটি ভোটার ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন,ভোট শেষে প্রতিটি কেন্দ্রেই ব্যালট গণনা করে ফল ঘোষণা করবেন প্রিজাইডিং অফিসার।এরপর সেটি পাঠিয়ে দিবেন রিটার্নিং অফিসারের কাছে।রিটার্নিং অফিসার প্রাপ্ত ফল নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন।কমিশন সেটি ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে বেসরকারি ফল হিসেবে প্রকাশ করবে।
বেসরকারি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্ল্যাহ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর একটি কেন্দ্রের সবগুলো বুথের ব্যালট বাক্সগুলো একটি নির্ধারিত কক্ষে আনা হবে গণনার জন্য।এরপর প্রার্থীদের এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সগুলো থেকে ব্যালট পেপার গুলো বের করা হবে গণনার জন্য।
গণনা শেষ হলে সবার প্রাপ্ত ভোট উল্লেখ করে যে তালিকা হবে সেটিতে পোলিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেবেন ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর জন্য।
মূলত কেন্দ্রগুলোতে ভোট গণনার যে ফল সেখান থেকে এজেন্টদের মাধ্যমে জনসাধারণ ওই কেন্দ্রের ফল জেনে যায়।
তবে গণনা শেষে ব্যালট পেপারসহ সব জিনিসপত্র কন্ট্রোল রুমে নেয়া হয় সংরক্ষণের জন্য।গণপ্রতিনিধিত্ব সংশোধন আইন অনুযায়ী এসব ডকুমেন্ট একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণের নিয়ম আছে।
রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে ফল পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ঢাকা থেকে সংসদীয় আসন ভিত্তিক বেসরকারি ফল প্রকাশ করে।
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই সব জেলার জন্য একজন করে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করেছে।তবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের জন্য দুজন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বেসরকারি ফলাফল প্রকাশ করার কয়েকদিনের মধ্যে গেজেট আকারে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে থাকে।
তবে গণপ্রতিনিধিত্ব সংশোধন আইন ২০২৩ অনুযায়ী চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হলেও ব্যালট পেপার সিলগালা অবস্থায় নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে এবং এক বছর সংরক্ষণে রাখতে হবে।পরে প্রয়োজন হলে উচ্চ আদালত এগুলো খোলার বা পরিদর্শনের আদেশ দিতে পারবে।
এছাড়া আইন অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যয়ের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ব্যয় বিবরণী দাখিল করবে।নিবন্ধিত দলগুলো তাদের প্রার্থীদের ব্যয় বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে কমিশন তার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
পরে প্রার্থীদের দাখিলকৃত বিবরণী রিটার্ন বা দলিলাদি কমিশনের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করতে হবে।
এর মধ্যে কোন প্রার্থী চাইলে নির্বাচন বাতিল বা নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে যেতে পারবেন।
আইনে বলা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগ কোন কারণে নির্বাচনি দরখাস্তের বিচার মুলতুবি রাখবে না এবং ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে।
নির্বাচনে মারাত্মক দুর্নীতি বা বেআইনি কার্য সংঘটিত হলে হাইকোর্ট নির্বাচন সম্পূর্ণ বাতিল করতে পারবে।