প্রতিনিধি ১৮ নভেম্বর ২০২৫ , ২:৫১:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স চালু করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।দুই সেমিস্টারের এ প্রশিক্ষণ চলবে ১০ মাসব্যাপী।এ সময় প্রশিক্ষণার্থীরা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টার্ন করবেন।১২টি পিটিআইতে এক হাজার ৪৪০ জন প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি হতে পারবেন।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানান জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক ফরিদ আহ্মদ।
তিনি বলেন,দুই সেমিস্টারের এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ হবে ১০ মাস।প্রতি সেমিস্টার পাঁচ মাস করে।দুই সেমিস্টারেই প্রশিক্ষণার্থীরা প্রশিক্ষণ চলাকালীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টার্ন করতে পারবেন।এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা শেষ বর্ষে যেভাবে ইন্টার্ন করেন সেইভাবে ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থীরা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে ইন্টার্ন করবেন।
নেপ মহাপরিচালক বলেন,১২টি পিটিআইয়ের মধ্যে ঢাকায় ৯০ জন,চট্রগ্রামেব ১৫০,রাজশাহীতে ১২০,রংপুরে ১২০,সিলেটে ৯০,বরিশালে ১২০,ময়মনসিংহে ১৫০,যশোরে ১২০,কুমিল্লায় ১২০,জয়দেবপুরে ৯০,দিনাজপুরে ১২০ এবং বগুড়ায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি হতে পারবেন।
এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেপ মহাপরিচালক বলেন,১০ মাস মেয়াদি এই ডিপিএড প্রোগ্রাম হবে অনাবাসিক এবং বৈকালিক। প্রাথমিকভাবে চালু হতে যাওয়া ১২টি পিটিআই হল-ঢাকা, চট্টগ্রাম,রাজশাহী,রংপুর,সিলেট,বরিশাল,ময়মনসিংহ,যশোর, কুমিল্লা,জয়দেবপুর,দিনাজপুর ও বগুড়া।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,বাংলাদেশের যেকোনো স্থায়ী নাগরিক এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ-সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ এবং ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮) স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন।তবে শিক্ষা জীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ/সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য নয়।নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে আগ্রহী প্রার্থীরা কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ফরিদ আহ্মদ,আবেদনকারীকে নেপের ডিপিএড বোর্ড আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য ৫০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ভর্তি পরীক্ষা (বাংলা,ইংরেজি,গণিত ও সাধারণ জ্ঞান,সময় ৫০ মিনিট) গ্রহণ করা হবে।উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ভর্তির শর্ত পূরণ সাপেক্ষে পিটিআইভিত্তিক মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি হবেন।
ডিপিএড প্রোগ্রামটিতে মোট ১২০০ নম্বরের মূল্যায়ন হবে। প্রোগ্রামটির মোট ক্রেডিট ৩৫ এবং ২টি সেমিস্টারে ১০ মাসের কার্যক্রমটি পরিচালিত হবে।এই প্রোগ্রামে তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে শিক্ষা পরিচিতি ও শিক্ষাদর্শন,শিশুর বিকাশ ও শিখন, শিক্ষণ পদ্ধতি-কৌশল ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনা,শিক্ষাক্রম ও শিখন সামগ্রী,শিখন মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন,ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন-বাংলা ও ইংরেজি,গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি,সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গঠন,শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শিল্পকলা কোর্সসমূহ এবং হাতে কলমে অনুশীলনের জন্য সিমুলেশন,বিদ্যালয়ভিত্তিক অনুশীলন ও প্রতিফলনমূলক চর্চার ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি আরও বলেন,এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিকভাবে সমৃদ্ধ করবে।শিক্ষাদর্শন,শিক্ষণ কৌশল ও মূল্যায়ন কাঠামো শেখার মাধ্যমে তারা আধুনিক শিক্ষক হিসেবে দক্ষ হয়ে উঠবেন।শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা উন্নত হবে, যা ভবিষ্যৎ পেশাগত জীবনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। প্রোগ্রামটি শেষে শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠবে,যা তাদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও সমাজে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারে সহায়ক হবে।











