সম্পাদকীয়

শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অপরাধ-১৫ই আগষ্ট খুনীদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর কন্যা!

  প্রতিনিধি ২৯ নভেম্বর ২০২৫ , ৪:৫৫:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অপরাধ তিনি ১৫ ই আগষ্ট খুনীদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর কন্যা।১৯৭৪ সালে ইন্দিরা – মুজিব চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল।১৯৭৪ সাল থেকে ২০২৫ তথা ৫১ বছর হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ভারতের কাছে বিক্রির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে তাকে দূর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভী প্রমাণের সকল চেষ্টা করেছিল বন্দুকের নল দিয়ে ক্ষমতা দখল করা কোনদিন রাজনীতি না করেও রাজনীতিবীদ বনে যাওয়া সুযোগসন্ধানী ও ক্ষমতালোভী রাজনীতিবীদ জিয়া।এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের ৭বছর পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জন্ম হয়েছিল অভিশপ্ত রাজনীতিবীদ জিয়া।

বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামালের ব্যাংক ডাকাতির নাটক শেখ কামাল কর্তৃক ডালিমের বউ ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার ব্যাংক একাউন্টে পাওয়া যায় মাত্র পাঁচ হাজার টাকা!অথচ প্রচার করা হয়েছিল বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার শেখ মুজিব ভারতে পাচার করেছিলেন!

গত ৫১ বছরেও শেখ মুজিবকে ব্যাংক ডাকাত প্রমাণ করা যায়নি।মেজর ডালিম তার নিজের বই ” যা দেখছি,যা বুঝেছি ” সেখানেও প্রমাণ করতে পারেননি শেখ কামাল তার বউকে ধর্ষণ করেছেন।তবুও একদল আহম্মক বিশ্বাস করে, শেখ কামাল ধর্ষক!শেখ কামাল ও জাতীয় অ্যাথলেট সুলতানা কামালকে হত্যা করে তাদের সকল ভালো কাজ দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতির কাছ থেকে আড়াল করে রাখা হয়।
বাংলাদেশের ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসে যে বিএনপির কোনো অবদান ছিলো না তারাই হয়ে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও রাজাকারের সবচেয়ে বড় পাহারাদার।কাশিমবাজার কুঠির দ্বিতীয় মীর জাফর হচ্ছে খুনী জিয়া।

তথাকথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতাকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের ২৬লক্ষ নাগরিক বাংলাদেশের সরকারি দপ্তরে চাকরির কাল্পনিক গুজব রটিয়ে নিরীহ মানুষের মধ্যে বিদ্বেষী মনোভাব সৃষ্টির মাধ্যমে রাস্তায় নামিয়ে দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি পূর্বক ভাংচুর,লুটপাট,অগ্নিসংযোগ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মৌলবাদী জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরাশক্তির প্রকাশ্য মদদপুষ্ঠ সরকার গঠন করছেন।দেশের আইন ও শৃঙ্খলার চরম অবনতি।মব ভায়োলেন্স,মব জার্স্টিস,চাদাঁবাজি,চুরি-ডাকাতি,লুটপাট,ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ,পুড়িয়ে-পিঠিয়ে মানুষ হত্যা সহ প্রভৃৃতি অপরাধমুলক কর্মকান্ড নিবিঘ্নে ঘটছ।কল-কারখানায় চাঁদাবাজি,চাঁদা না দেয়ায় হাজার হাজার কল-কারখানা,গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ করিয়ে দেয়ায় ২৭লাখ মানুষ কর্ম হারিয়ে বেকার হয়েছে।বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সাড়ে ৬ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে আসবে।২কোটি মানুষ মঙ্গায় পীড়িত হওয়ার পথে রয়েছে।এসব দূর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।সংস্কারের নামে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪দলকে নিশ্চিহ্ন করতে মিথ্যা-বানোয়াট,মনগড়া,কাল্পনিক অভিযোগের মামলা দিয়ে জেল-জুলুম ও হত্যা করা হচ্ছে।এসব ফন্দি-ফিকির করে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবির্ভাব হয় বাংলার তৃতীয় মীরজাফর সুদী ব্যাবসায়ী ইউনূস।গত ১৫ মাস ধরে শেখ হাসিনার সমকক্ষ হতে না পেরে ইউনূস উন্মাদ হয়ে গেছেন।১৪০০ মানুষ হত্যা,২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার এবং নতুন করে শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি গয়নার মিথ্যা নাটকের গল্প তৈরি করেছেন। শেখ হাসিনাকে খুনী ও ফ্যাসিস্ট সাজানোর জন্য ইউনূস ২০১৮ সালের আমেরিকার অপারেশন বিডি এর অংশ হয়ে কাশিমবাজার কুঠি গড়ে তুলেছিলেন আমেরিকায়।তার মাধ্যমে মেটিকুলাস ষড়যন্ত্র করে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন।

শেখ হাসিনার দীর্ঘ ছয় দশকের রাজনৈতিক সংগ্রামের জীবনে পৃথিবীতে অসংখ্য রাজনৈতিক নেতার কু-কর্মের নথিতে কোথাও শেখ হাসিনার নাম নেই।উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া নথিতে শেখ হাসিনার নাম নেই।পান্ডুরা পেপারস ও পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে কোথাও দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকা শেখ হাসিনার এক পয়সাও দূর্নীতির কোন রেকর্ড নেই।কিন্তু ক্ষমতার বাইরে থেকেও সেই দূর্নীতির তালিকায় ফাঁস হওয়া নথিতে এসেছিল খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক ও কোকোর দূর্নীতির চিত্র প্রমাণ সহ।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ” কাশিমবাজার কুঠি তৈরি করার পর থেকেই শেখ হাসিনাকে দূর্নীতিবাজ প্রমাণের জন্য পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে কানাডার আদালতে মামলা করে চড় খেলো ইউনূস ও বিশ্বব্যাংক।

২০২৪ সালে বন্দুকের নল দিয়ে ক্ষমতা দখল করে ইউনূস গং প্রচার করার চেষ্টা করলো ,” রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শেখ হাসিনা ৫ বিলিয়ন ডলার চুরি করেছেন!রাশিয়ার রোসাটম ইউনূসের গালে কষে চড় মারার পর ইউনূস শেখ হাসিনার কোন দূর্নীতি প্রমাণ করতে না পেরে ১৪০০ মানুষ নিহত (যদিও সরকারি গেজেটে সংখ্যা ৮৪৪)হলেও এরমধ্যে ২৫৭জনকে জীবিত পাওয়া গেছে।নাটক সাজিয়ে আদালতকে টমেটো ট্রায়াল বানিয়ে বাদী ও আসামী পক্ষে জামায়াতের আইনজীবী দাঁড় করিয়ে হাস্যকর নাটক করে জাতিসংঘ থেকে চড় খেলো।

প্রতিবছর গ্রামীণফোনের নামে ইউনূসের ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করার কাহিনী যখন সমগ্র বাংলাদেশ জেনে গ্রামীণ বয়কট শুরু করেছে তখন বস্তিতে আগুন দিয়ে ১৫ মাস পর শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি গয়নার মিথ্যা আরেক নাটক জাতির সামনে উপস্হাপন করেছে।ইউনূসের এসব ভণ্ডামি নাটক দেশের মানুষ বুঝে।

গদি দখলের এক বছরে দীর্ঘ ২১ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকা শেখ হাসিনার ১৭ টি ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করে ইউনূস পেলো মাত্র ৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।অথচ প্রচার করা হয়েছে শেখ হাসিনা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মালিক!একটি দেশের ২১ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে ১০০ কোটি টাকাও পাওয়া গেলো না!অথচ ইউনূসের মত একজন সুদ ব্যাবসায়ীর কর হয়েছে ৬৬৬ কোটি টাকা।এই হচ্ছে ইউনূসের অবস্থা নিজের হাজার হাজার কোটি টাকার দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে ইউনুস নতুন নতুন নাটক সামনে নিয়ে আসছেন।

শেখ হাসিনার চেয়েও এই দেশে বেশী টাকা আছে।কোক বয়কটের নাটের গুরু আকিজ কোম্পানির কাছে।রাষ্ট্রের ১৩ হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়ে তার সম্পত্তির পরিমাণ দশ হাজার কোটি।আর শেখ হাসিনার বাপ ৫৪ সালের মন্ত্রী ,৭০ সালের প্রধানমন্ত্রী আর শেখ হাসিনা ২১ বছর প্রধানমন্ত্রী হয়ে মাত্র ৪১ কোটি টাকা!এর চেয়েও ব্যাংকে বেশি টাকা আমাদের গ্রামের নবীনের আছে।

শেখ হাসিনার কোন বিকল্প হয় না।দূর্নীতি কখনোই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে স্পর্শ করতে পারেনি।দুর্নীতিবাজ হওয়ার জন্য খালেদা ও জামায়াতের মতো পাঁচ বছর যথেষ্ঠ,২১ বছর লাগে না।এজন্য বিএনপি ও জামায়াত পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।শেখ হাসিনা হয় না।।শেখ হাসিনার সততা ও সৎ-সাহস তার সবচেয়ে বড় সম্পদ।শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ।একজন রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনা ও সুদখোর ইউনূস-খালেদার এটাই সবচেয়ে বড় পার্থক্য।

আরও খবর

Sponsered content