রাজনীতি

শাওন যুবলীগ কর্মী নয়, যুবদল কর্মীও নয়!

  প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১২:১২:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শাওন প্রধানকে যুবদল কর্মী বলে দাবি করছে বিএনপি। অপর দিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শাওন প্রধানের বাড়ির সামনে শাওনকে যুবলীগ কর্মী দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা।

তবে স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা গেছে, শাওন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন এবং তিনি যুবদলের কমিটিতে পদ পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ ছাড়া শাওনের ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি নিজেকে যুবদল কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

শাওন প্রধান যে যুবলীগের কর্মী নয়, তা নিশ্চিত করেছেন তাঁর চাচা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী। শাওন তাঁর চাচাতো ভাই মৃত সাহেব আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল দাবি করেছেন, ‘নিহত শাওন যুবদল কর্মী নয়; বরং আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা।’

তবে শাওন প্রধান যে যুবলীগের কর্মী নয়, তা নিশ্চিত করেছেন তাঁর চাচা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী। শাওন তাঁর চাচাতো ভাই মৃত সাহেব আলীর ছেলে।

গতকাল রাত ১০টায় সদর উপজেলার বক্তাবলীতে শাওনের বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে অবস্থানকালে শওকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শওকত আলী বলেন, ‘শাওন যুবলীগ কর্মী নয়, যুবদল কর্মীও নয়। সে কোনো প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়। যদি যুবদল কর্মী হয়ে থাকে,(বৃহস্পতিবার) মিছিলে গিয়ে থাকে, তবে সেটা আমি জানি না।’

এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যুবদলের মিছিলে সামনের সারিতে থাকা শাওনের ছবি দেখালে শওকত আলী ছবিটি শাওনের বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছবিতে শাওনকে দেখা যাচ্ছে। এই ছবি তো মুছে ফেলা যাবে না।’

শাওনকে যুবলীগ কর্মী দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ বিষয়ে বলেন, ‘যারা এটা বলতেছে, তারা সঠিক তথ্য জেনে বলেনি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘বিএনপি তাকে নিজেদের কর্মী প্রমাণ করতে পারলে বিএনপির ফায়দা আছে।কিন্তু আমি বলব, আমার সন্তান মারা গেছে।তার পরিবার যেন কোনো প্রতিহিংসার শিকার না হয়।নতুন করে এই পরিবারের লোকজন যেন ঝামেলায় না পড়ে।আমি চাই,ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। ন্যায়বিচার হোক।’

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শাওনের বাড়ির সামনে শওকত আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। শওকত আলীর দাবি, তাঁরা লাশ দাফনের জন্য অপেক্ষা করেছেন।

তবে সেখানে থাকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘ওর লাশ নিয়ে যেন বিএনপি কোনো ঝামেলা না করতে পারে,সে জন্য আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।’ এ সময় স্থানীয় কোনো বিএনপি নেতাকে সেখানে দেখা যায়নি।

সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় তিনজন ছাত্রলীগ নেতা, দুজন ব্যবসায়ী, শাওনের মামা, বন্ধুসহ অন্তত ১৫ জনের সঙ্গে কথা হয়েছে।তাঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, শাওন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় তিনজন ছাত্রলীগ নেতা, দুজন ব্যবসায়ী, শাওনের মামা, বন্ধুসহ অন্তত ১৫ জনের সঙ্গে কথা হয়েছে।তাঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, শাওন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্থানীয়ভাবে মৎস্যজীবী দলনেতা সলিমুল্লাহ হৃদয়, যুবদল নেতা আমীর ব্যাপারী, শাহ আলী ও মহসিন ব্যাপারীর সঙ্গে শাওনের সখ্য ছিল। বক্তাবলী ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য চেষ্টা করছিলেন তিনি।কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাদেকুর রহমানের অনুসারী ছিলেন শাওন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাওনের এক মামা বলেন, ‘শতভাগ নিশ্চিত থাকেন, শাওন যুবদল করত। কিন্তু সবকিছু বলা যায় না। বুঝেন তো। অনেক কিছুই বলা নিষেধ।’

শাওনের পরিবার সূত্রে পাওয়া তাঁর ফেসবুক আইডি ঘুরে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ‘Shawon ahmed (রাজা) ’ নামে তাঁর ফেসবুক আইডির ‘বায়ো’তে শাওন লিখেছেন, ‘কর্মীর চেয়ে বড় কোন পদ নাই/সাক্ষী দেহের ঘামে ভেজা নগরীর রাজপথ/ফতুল্লা থানা যুবদল জিন্দাবাদ।’

আরও খবর

Sponsered content