আন্তর্জাতিক

রুশদির ওপর হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রশংসা করে তাকে পুরস্কৃত করছে ইরানের একটি ফাউন্ডেশন

  প্রতিনিধি ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:১৫:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে গতবছর ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রশংসা করে তাকে পুরস্কৃত করছে ইরানের একটি ফাউন্ডেশন।

পুরস্কার হিসেবে হামলাকারীকে এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি দিচ্ছে ফাউন্ডেশনটি।ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি মঙ্গলবার তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে একথা জানিয়েছে।

গতবছর অগাস্টে শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন বুকারজয়ী এই লেখক।যখন তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল,তখনই এক লোক দৌড়ে স্টেজে উঠে ছুরি নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

৭৫ বছর বয়সী রুশদির ঘাড়ে ও শরীরে জখম হয়েছে বলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানায়।তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।সেখানে তিনি ছয়সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল,তার ঘাড়ে ও পেটে অন্তত একবার করে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।পরবর্তীতে রুশদি একচোখের দৃষ্টিশক্তিও হারান।

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসের জন্য তিন দশকের বেশি সময় ধরে হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন এর লেখক রুশদি।তার এই উপন্যাস বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল এবং বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।

রুশদির ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ হাদি মাতার (২৪) নামের এক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনে।সেই ব্যক্তি একজন শিয়া মুসলিম আমেরিকান এবং নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা।তিনি একটি পাস কিনে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেছিলেন এবং দর্শক সারি থেকে উঠে এসেছিলেন।হামলার ঘটনায় হাদি দোষ অস্বীকার করেছেন।

মঙ্গলবার ইরানের ফাউন্ডেশন টু ইমপ্লিমেন্ট ইমাম খামেনি’স ফতোয়াস’ এর সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইসমাইল জারেই বলেছেন, “রুশদির একটি চোখ অন্ধ করে এবং হাত অকেজো করে দিয়ে যিনি মুসলিমদেরকে খুশী করেছেন,তার এই সাহসী কাজের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে তাকে ধন্যবাদ জানাই।

“রুশদি এখন জীবন্মৃত একজন মানুষের চেয়ে বেশি কিছু না। এই বীরোচিত কাজ যিনি করেছেন তার সম্মানার্থে তাকে কিংবা তার আইনি কোনও প্রতিনিধিকে প্রায় ১ হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি দান করা হবে।”

১৯৯৮ সালে ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি লেখক সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া ঘোষণার ৩৩ বছর পর তার ওপর ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসকে কিছু মুসলিম ধর্মাবমাননা হিসাবেই দেখে।

রুশদির ওপর হামলাকারী হাদি মাতার এসেছেন দক্ষিণ লেবাননের ইয়ারুন শহর থেকে।এনবিসি নিউ ইয়র্ক পত্রিকা জানায়, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হাদি মাতারের স্যোশাল মিডিয়া একাউন্ট যাচাই করে দেখেছে,এই ব্যক্তি শিয়া উগ্রপন্থা এবং ইরানের রেভল্যুশনারী গার্ডের সঙ্গে সহমত।

ইরান রুশদির মাথার দাম ৩০ লাখ ডলার ঘোষণা করেছিল। এরপর প্রায় দশ বছর একপ্রকার পালিয়ে থাকতে হয়েছিল রুশদিকে।

২০১৯ সালে ইরানে খোমেনির উত্তরসূরি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এসে এক টুইটে বলেন,রুশদির বিরুদ্ধে দেওয়া তিন দশকের পুরোনো সেই ফতোয়া এখনও ‘অপরিবর্তনীয়’ রয়েছে।তার এমন আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পর টুইটার কর্তৃপক্ষ তাকে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে বহিষ্কার করে।

আরও খবর

Sponsered content