প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:০৭:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির ওপর ন্যাক্কারজনক আঘাত হেনেছে একশ্রেণীর দুস্কৃতিকারীরা।

তবে এসব দুস্কৃতিকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় রাজনৈতিক মতাদর্শের গুটি কয়েক ব্যক্তি নাকি মৌলবাদী কোন শক্তি অথবা ভিনদেশি কোন ভাড়াটে দুস্কৃতিকারী তা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার না হলেও এটি স্বাধীনতা বিরোধী কোন পক্ষ ঘটিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে থাকা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতৃবৃন্দ মনে করছেন।
শনিবার (২/১৮/২০২৩ ইং) ভোর রাতের কোন এক সময়ে মিশিগান রাজ্যের ব্যস্ততম এলাকা হিসেবে পরিচিত হেমট্রামিক সিটির বায়তুল মোকারম মসজিদ সন্নিকটে স্থাপিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল মোড়াল দুস্কৃতিকারীরা কালো রং দিয়ে মুছে দেয়–! শুধু তাই নয়,এই মহান নেতার চোখও বিকৃতি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে,যে চোখ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন অসাধারণ মেধা সম্পন্ন নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছিলেন,সেই নেতার দূরদর্শী চোখ ও মেধাকে সহ্য করতে না পেরে বা অন্তর্জ্বালা থেকেই এই নিকৃষ্টতম মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে দুষ্কৃতীকারীরা।
এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে মিশিগানের আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ,বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।বেশ কয়েক বছর আগে সংশ্লিষ্ট স্থানে স্থাপিত ও রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত বঙ্গবন্ধুর এই প্রতিকৃতিতে এমনভাবে কালিমা লেপন করে দেয়া হয়েছে যে,এখন আর ছবিটুকু কিছুই বুঝা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের আগ মুহূর্তে এই ধরনের ঘটনা ঘটার নেপথ্যে এক গভীর ষড়যন্ত্র ইঙ্গিত বহন করছে বলে এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশী সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মনে করছেন।মিশিগান স্টেট্ আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর মাখন ও সাধারণ সম্পাদক চান মিয়া জনকণ্ঠকে দেয়া এক বিশেষ প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন,বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এমনভাবে হাত দিয়ে দুঃসাহস দেখিয়েছে দুস্কৃতিকারীরা।
তাদের মতে,এসব দুস্কৃতিকারী নিশ্চয় ঘাপটি মেরে থাকা কোন স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষ এবং বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করতে পারে না এমন নরপশুরা।এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করে পুলিশি তদন্ত ও গ্রেফতার এবং আদালত কর্তৃক বিচারের মাধ্যমে দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন,এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে দ্রুত কর্মসূচি দেয়া হবে।প্রবাসী সাধারণ নাগরিকরাও এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে বলেছেন,বাংলাদেশকে রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উচিত,যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে অতি দ্রুত আনুষ্ঠানিক কথা বলে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো এবং দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করা।সেই সাথে এখানকার সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল সহযোগী সংগঠনগুলোকে আরও তৎপর হওয়া এবং অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার তাগিদ বা চাপ সৃষ্টি করা।
বলাবাহুল্য,অল্প কিছুদিন আগেও হেমট্রামিক সিটি সংলগ্ন ডেট্রয়েট সিটিতে অবস্থিত প্রধান সড়কের পাশে থাকা বাংলা টাউন সাইনবোর্ড এ কে বা কারা একইভাবে কালিমা লেপন করে প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাংলা ভাষাকে অমর্যাদা করেছিল. এ বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানানোর পর তারা ঘটনা স্থলে এসে ঘটনার সুষ্পষ্ট প্রমান পেলেও দোষীদের চিহ্নিত কল্পে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস এখন পর্যন্ত অন্ধকারেই রয়ে গেছে ।
তবে তখন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল,সংগঠন বা প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে জুড়ালো কোন সম্মিলিত ধারাবাহিক প্রতিবাদ হয়নিযে কারণে যুক্তরাস্ট্রের মিশিগানের মাটিতে ঘাপটি মেরে থাকা দুস্কৃতিকারীরা আবারও বঙ্গবন্ধুর মতো বিশ্ব মাপের একজন বড় নেতা ও স্বাধীন দেশের স্থপতির প্রতিকৃতিতে হাত দেয়ার দুঃসাহস পেল।এদিকে বাংলা টাউন সাইন বোর্ড এ ঘটনার পর কোন জুড়ালো প্রতিবাদ কর্মসূচি দেয়া,আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা ও বঙ্গবন্ধুর মোড়ালের চারপাশে কোন পর্যাপ্ত আলো ও সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থ্যা করা হলো না কেন এমন প্রশ্নের সদোত্তর দিতে পারেননি এখানকার সংশ্লিষ্ট কয়েক নেতৃবৃন্দ।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে কালিমা লেপনের বিষয়টি শনিবার রাতেই স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।পুলিশ বলেছে,বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।তবে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এ নিয়ে মিশিগানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহল ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
















