প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২৫ , ৫:৫০:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।ইরানের ভূখণ্ডে চালানো সাম্প্রতিক হামলার জেরে জাতিসংঘের দারস্ত হলো তেহরান।যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে আগ্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে দেশটি।

চলতি বছরের ১৩ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ইরানের বিভিন্ন বেসামরিক অবকাঠামো,হাসপাতাল,ত্রাণ কেন্দ্র ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর ঘটনায় এই দাবি জানিয়ে জাতিসংঘে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
তার পাঠানো আনুষ্ঠানিক চিঠিতে বলা হয়েছে,এসব হামলা শুধু যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন নয়,বরং জাতিসংঘ সনদের ভিত্তিমূলের এবং মানবাধিকার সনদের গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদগুলোরও সরাসরি ভাঙন।
তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,শনিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি লিখেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।যেখানে তিনি ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্প্রতিক আগ্রাসনের জন্য দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন,১৩ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালিয়েছে। যা স্পষ্টভাবে জাতিসংঘ সনদের ২(৪) ধারা লঙ্ঘন করে। এই হামলায় আবাসিক এলাকা,নিরীহ নাগরিক,হাসপাতাল ও ত্রাণকেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
এছাড়া ইরানের কুম,আরাক,ফোর্দো,নাতাঞ্জ ও ইস্ফাহানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতেও আঘাত করা হয়েছে।যা জাতিসংঘ সনদ,পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ও আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার বিধিনিষেধের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন,যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলায় বেশ কয়েকটি পরমাণু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও ইরান সম্ভবত কয়েক মাসের মধ্যেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন আবার শুরু করতে পারবে।
তবে আরাঘচি জানিয়েছেন,যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলায় পারমাণবিক স্থাপনায় গুরুত্বর ক্ষতি হয়েছে। যদিও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন,ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক ‘দশক’ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ১২ দিনের এ যুদ্ধে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ইসরাইলের জন্য থাড প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রায় ১৫-২০ শতাংশ মজুত ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।এতে দেশটির মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮০০ মিলিয়ন ডলারে।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিভিন্ন সামরিক ও বিশ্লেষক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে আইএইএ মহাপরিচালক গ্রোসিকে ইরানে গ্রেফতারের দাবিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় রুবিও বলেছেন,আমরা ইরানে আইএইএ-এর গুরুত্বপূর্ণ যাচাই ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমকে সমর্থন করি এবং মহাপরিচালক ও সংস্থার নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করি।’
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আরাঘচি বলেছেন,আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে আমাদের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে ক্যামেরা স্থাপন করার অনুমতি দেবো না এবং সংস্থার প্রধানকে দেশে প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হবে।’
এরপরদিন রোববার আরাঘচি বলেছেন,ইরানি জনগণ কাউকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে দেবে না।তারা রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত এই পথে অবিচল থাকবে।’

















