আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২৫ , ৫:৩৮:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।বাতাসের প্রতিটি ঝাপটায় ভেসে আসছে লাশের গন্ধ,মিয়ানমারের সাগাইংয়ের বাসিন্দা থার এনগি সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন।

গতকাল রোববার এনগি বলেন, ‘এখন জীবিতদের চেয়ে মৃতদেহ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল মিয়ানমার।ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল সাগাইং অঞ্চলে। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। কিন্তু ইরাবতী নদীর ওপর একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছিলেন না।

থার বলেন, ইরাবতী নদীর ওপর ইয়াদানাবন সেতু আবার খুলে দেওয়ার পর রোববার সকালে কাছের মান্দালয় শহর থেকে উদ্ধারকর্মীরা সাগাইংয়ে আসেন।

কাছেই আভা নামে আরেকটি সেতু ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে। প্রায় ৯০ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে এই সেতু তৈরি করা হয়েছিল।

ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩ হাজার ৪০০ জন।বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

নিখোঁজদের মধ্যে একজন থারের ছেলে। তিনি বলেন,ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের আশা তিনি প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন।নগরীর অনেকে প্রিয়জনদের হারিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

থার বলেন,তাঁদের এলাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।বিপরীতে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছেন ৩৬ জনকে।

সাগাইং থেকে ২২ কিলোমিটার পূর্বে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী মান্দালয়।প্রাচীনকালে এটি মিয়ানমারের রাজধানী ছিল। ভূমিকম্পে মান্দালয়েও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে,বহু অবকাঠামো ধসে পড়েছে।কিন্তু ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকর্মীরা ঠিকমতো উদ্ধারকাজ চালাতে পারছেন না। খালি হাতেই তাঁরা জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ভূমিকম্পের পর মান্দালয় এবং সাগাইংয়ের বেশির ভাগ অংশ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।উভয় শহরেই রোববার তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

মিয়ানমারের অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর সদস্য তেত ওয়াই রোববার ইয়াঙ্গুন থেকে মান্দালয়ে পৌঁছান।

তেত ওয়াই বলেন,মান্দালয়ে তাঁরা প্রথম যেখানে উদ্ধার অভিযানে যান, সেখান থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জীবিত মানুষের চেয়ে মৃতদেহ বেশি পাওয়া যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।তবে মানুষের জীবন রক্ষায় তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবেন বলেও জানান তেত ওয়াই।

তেত ওয়াই বলেন,আমরা যে মৃতদেহটি খুঁজে পেয়েছি,সেটি পচতে শুরু করেছে।এটা খুবই হৃদয় বিদারক।এই দুর্যোগ আমাদের পক্ষে একা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’

আরও খবর

Sponsered content