আন্তর্জাতিক

মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অনেকটা কোণঠাসা

  প্রতিনিধি ১০ অক্টোবর ২০২২ , ১:০২:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্ট।।কুয়েত সরকার ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কঠোর নজরদারির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে হুন্ডি ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যদের খুঁজে পাচ্ছেন না দেশটিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীরা। ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকসহ অন্যান্য পেশার লোকজন এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন।

এ দিকে বৈশিক মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। গতকাল শনিবার কুয়েত সিটিতে এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন কুয়েতের বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এখানে নিত্যপণ্যের জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করে।

আগে একটি রান্না করার দেড় লিটার তেলের বোতল কিনতাম এক দিনারে। এখন সেই তেলই কিনতে হচ্ছে প্রায় দুই দিনার। শুধু তেল নয় সব কিছুই আমাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে। কিন্তু আমাদের বেতন যা ছিল এখনো তা-ই আছে।

তিনি বলেন, একজন শ্রমিক বর্তমানে ক্লিনিক কাজের জন্য মাসে ৭৫ দিনার বেতন পান। যার কারণে বেতনের টাকা দিয়ে আমাদের নিজেদেরই চলতে কষ্ট হচ্ছে। ফলে আগে প্রতি মাসে যে টাকা পরিবারের কাছে পাঠাতাম সেই তুলনায় ছয়-সাত হাজার টাকা কম পাঠাতে পারছি।

শুধু কুয়েত নয়, সৌদি আরব, বাহরাইনসহ মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোর চিত্রও একই রকম। সেখানে থাকা আমাদের আত্মীয়স্বজন বন্ধুদের সাথে নিয়মিত এসব নিয়ে কথা হয়। এই মুহূর্তে কুয়েতের প্রবাসীরা কি ধরনের সমস্যায় আছেন- জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন বলেন, সমস্যা তো কমবেশি অনেকই আছে।

এরইমধ্যে বড় সমস্যা হচ্ছে পাসপোর্ট নিয়ে। আগে একটি পাসপোর্টের আবেদন করার পর দূতাবাস দুই মাস সময় দিতো। এখন দূতাবাস সময় নিচ্ছে তিন মাসের। তারপরও দূতাবাস ঠিকমতো পাসপোর্ট দিতে পারছে না।

বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অ্যাম্বাসির কাছে আমরা কারণ জানতে চাইলে তারা দোষ দেন বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট ডেলিভারি দিচ্ছে না। আর পাসপোর্ট সময়মতো না পাওয়ার কারণে ভিসাসহ নানা জটিলতা হচ্ছে প্রবাসীদের।

আপনারা এখন কোন পদ্ধতিতে বাংলাদেশে টাকা পাঠাচ্ছেন- জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলেই আমরা টাকা পাঠাচ্ছি। ২ দশমিক ৯ দিনার দিলে দেশে এক হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। এখন ডলারে কত পড়ল তাতো বলতে পারছি না।

হুন্ডিতে টাকা পাঠানো চক্রের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসী জালাল উদ্দিন বলেন, কুয়েত ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কঠোর নজরদারির কারণে এখন তো কুয়েত সিটি থেকেই হুন্ডি ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের আমরা সিটিতে গিয়ে খুঁজে কোথাও পাচ্ছি না।

প্রবাসী মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রবাসীরা যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠায় সে জন্য প্রতিটি দূতাবাস-হাইকমিশন সংশ্লিষ্টদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সাথে হুন্ডিরোধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ নানা দিকনির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content