অপরাধ-আইন-আদালত

ভল্ট ভেঙে সাড়ে ৭ কেজি হেরোইন,সাড়ে ২৪ লাখ টাকা,২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার ও ১৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার

  প্রতিনিধি ১৯ জুন ২০২৩ , ৩:০২:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি।।রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এক মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে স্টিলের ভল্ট পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ভল্ট ভেঙে সাড়ে ৭ কেজি হেরোইন,সাড়ে ২৪ লাখ টাকা,২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার ও ১৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

এ সময় বাড়িমালিক ও মাদক ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।রাজশাহীর গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা ও গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তার মাদক ব্যবসায়ীর নাম জিয়ারুল ইসলাম (৩৫)।তাঁর বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আচুয়া কসাইপাড়া মহল্লায়।স্থানীয়ভাবে লোকজন তাঁকে কৃষক হিসেবে চেনেন।তাঁর নামে চার বছর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল জানিয়েছেন,তিনি দীর্ঘদিন ধরে হেরোইনের ব্যবসা করেন।তিনি আরও কয়েকজন প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীর নাম বলেছেন।তাঁদের সমন্বয়ে গঠিত চক্রের সঙ্গে তিনি এই ব্যবসা করে আসছিলেন।জিয়ারুল সীমান্ত থেকে বাহকের মাধ্যমে হেরোইন এনে তাঁর বাড়িতে মজুত করেন এবং সুবিধামতো দেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট প্যাকেটে সরবরাহ করেন।তাঁর বাড়িতে সোনা মাপার মতো দাঁড়িপাল্লাও পাওয়া গেছে।সেখানেই উদ্ধার করা সোনার ওজন মাপা হয়েছে।মাদক ব্যবসা করে জিয়ারুল বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।নিজের মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ, সোনা ও হেরোইনের নিরাপদ হেফাজতের জন্য প্রায় তিন বছর আগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ভল্টটি সংগ্রহ করেন তিনি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন,রাজশাহী জেলায় মাদক উদ্ধারের ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ হেরোইন উদ্ধারের নজির খুব কম।মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযান চলবে।মাদক ব্যবসায়ীদের যে চক্রের নাম পাওয়া গেছে,তা যাচাই-বাছাই করে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। আপাতত তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়,জিয়ারুলের বাড়িতে হেরোইনের বড় চালান আছে,এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি করে মাত্র ৫০০ গ্রাম হেরোইনের সন্ধান পায়। তল্লাশির একপর্যায়ে তাঁর বাড়িতে কাপড় দিয়ে ঢাকা স্টিলের প্রায় সাড়ে চার ফুট বাই আড়াই ফুট একটি ভল্ট পাওয়া যায়।ভল্টের চাবির জন্য অনুরোধ করা হলে জিয়ারুল বলেন, এটা তাঁদের পৈতৃক পুরোনো সিন্দুক।এর কোনো চাবি তাঁদের কাছে নেই।গোয়েন্দা তথ্য থাকার কারণে ভল্ট ভাঙার জন্য ফায়ার সার্ভিসকে আহ্বান জানানো হয়।ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে ভল্ট ভেঙে ভেতর থেকে আরও ৭ কেজি হেরোইন,১৮ বোতল ফেনসিডিল,হেরোইন বিক্রির ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।উদ্ধার করা হেরোইনের মূল্য প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা এবং স্বর্ণালংকারের মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।

অনেক সময় টাকায় হোরোইনের মূল্য পরিশোধ করতে সমস্যা হয়,তখন মাদক ব্যবসায়ীরা স্বর্ণালংকারের মাধ্যমে হেরোইনের মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।এই স্বর্ণালংকার সেই কাজেই ব্যবহার করা হতো।ভল্ট ভেঙে হেরোইন উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জিয়ারুল এসব কথা স্বীকার করেছেন।তিনি পুলিশকে বলেছেন,সাড়ে ২৪ লাখ টাকা হেরোইন বিক্রির। তাঁর কাছে আরও হোরোইন ছিল।সেগুলো তিনি বিক্রি করেছেন। তবে তিনি ফেনসিডিল বিক্রি করেন না। নিজে সেবন করেন।

আরও খবর

Sponsered content