আন্তর্জাতিক

ব্রিকসের সম্প্রসারণ ‘বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নকে আরও শক্তিশালী করবে’

  প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২৩ , ৫:২৬:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।উদীয়মান অর্থনীতির ব্রিকস ক্লাবের সম্প্রসারণকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।তবে এ জোটের সদস্য দেশগুলোর স্বার্থ একে অপরের সাথে কতটা জড়িত তা এখনও স্পষ্ট নয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্যিক কেন্দ্র জোহানসবার্গে একটি সম্মেলন কেন্দ্রে সমবেত নেতাদের উদ্দেশে ভাষণে শি বলেন, ব্রিকসের সম্প্রসারণ ‘বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নকে আরও শক্তিশালী করবে’।

ব্রিকসভুক্ত দেশ ব্রাজিল,রাশিয়া,ভারত,চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রায়শই পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বিশ্বের পাল্টা ভারসাম্য হিসেবে দেখা হয়।

তবে ছয়টি নতুন দেশ-আর্জেন্টিনা,মিশর,ইরান,ইথিওপিয়া, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামী জানুয়ারিতে জোটটিতে যোগ দিতে চলেছে।

পশ্চিমা আধিপত্য মোকাবেলার উপায় হিসেবে এ সম্প্রসারণের পক্ষে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিল চীন।

লন্ডনের সোস চায়না ইনস্টিটিউটের পরিচালক স্টিভ সাং বলেছেন,যদিও ব্রিকস সদস্যদের মধ্যে খুব বেশি মিল নেই, তবে প্রেসিডেন্ট শি তার সহযোগী ব্লকের সদস্যদের দেখানোর চেষ্টা করছিলেন যে তাদের সবার লক্ষ্য এক: তারা কেউই একটি পশ্চিমা-শাসিত বিশ্বে বাস করতে চায় না।

তিনি বলেন,চীনারা যা প্রস্তাব করছে তা হলো একটি বিকল্প বিশ্ব ব্যবস্থা,যেখানে স্বৈরাচারীরা তাদের নিজের দেশে নিরাপদ এবং নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারে।তারা গণতান্ত্রিক আমেরিকান এবং ইউরোপীয় শক্তির দ্বারা আরোপিত শর্তাবলী মেনে না নিয়েই উন্নয়নের বিকল্প দিক খুঁজে পেতে পারে।

অংশীদারিত্ব গঠনস:-
আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা নতুন যোগদানকারীদের সম্পর্কে ঘোষণা দিয়ে বলেন,আমরা ব্রিকসের সাথে একটি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের আগ্রহকে মূল্য দেই’।মূল দেশগুলো সদস্যপদের মানদণ্ডের বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর ভবিষ্যতে আরও দেশ যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে কতগুলো দেশকে আর কত দ্রুততার সাথে যোগ দিতে দেয়া উচিত তা নিয়ে এবার মতবিভেদ ছিলো।

পাঁচটি দেশকে ব্লকে যুক্ত করার বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল,কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়।

বুধবারের নৈশভোজে যোগ দেননি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি তার পশ্চিমা মিত্রদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে খুব সচেতন বলে দেখা গেছে।
এদিকে,ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া থেকে ভিডিও লিঙ্কে যোগ দেন।

তার মন্তব্যে তিনি আবারও পশ্চিমা শক্তিকে আক্রমণ করে বলেন,তাদের ‘নব্য-উদারনীতি’ উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঐতিহ্যগত মূল্যবোধের জন্য এবং একটি বহু-মেরু বিশ্বের উত্থানের জন্য হুমকিস্বরূপ,যেখানে কোনও একটি দেশ বা ব্লকের আধিপত্য নেই।

কারও নাম না নিলেও প্রেসিডেন্ট পুতিন কার কথা বলছিলেন তা স্পষ্ট ছিলো: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও,বেশ কয়েকবার দেশটির নাম উল্লেখ করা হয়।

এর আগে,মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান ব্লকের সম্প্রসারণ পরিকল্পনাকে হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করিলেন।

তিনি বলেন,গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ব্রিকস দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে,তিনি এটিকে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কারও ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিকশিত হতে’ দেখছেন না।

ওয়াশিংটনের কুইন্সি ইনস্টিটিউটের গ্লোবাল সাউথ প্রোগ্রামের পরিচালক সারং শিদোরের মতে,ছয়টি নতুন সদস্যের মধ্যে কাউকেই আমেরিকাবিরোধী রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হচ্ছে না।

তিনি বলেছেন,আমি মনে করি বার্তাটি হলো যে তাদের কেউই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র,আনুষ্ঠানিক মিত্র নয়, তাদের মধ্যে দুই বা তিনটি মার্কিনবিরোধী হবে৷তবে আরও বিস্তৃতভাবে,এটি আমেরিকাবিরোধী রাষ্ট্রের একটি দল নয়৷’

শিদোর বলেন,বিশ্ব আর তেমন জায়গায় নেই,যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমস্ত নিয়ম ঠিক করে দিতে পারে,বা সমস্ত প্রতিষ্ঠান চালাতে পারে।এটি নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।তবে বিকল্প? না, আমি মনে করি বিকল্পের পরিবর্তে সামনে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পরিপূরক দেখতে পাবো।’

আরও খবর

Sponsered content