সারাদেশ

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাবদা মাছের রপ্তানি বেড়েছে

  প্রতিনিধি ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৪:৫২:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

যশোর প্রতিনিধি।।যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাবদা মাছের রপ্তানি বেড়েছে।তবে এর বিপরীতে সে দেশ থেকে কার্প ও সামুদ্রিক মাছের আমদানি কমেছে।

এদিকে রপ্তানি বাড়লেও পাবদা মাছের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্থানীয় মাছচাষিরা বিপাকে পড়েছেন।

স্থানীয় মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী,সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মোট ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৯০ কেজি মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এর রপ্তানি মূল্য ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৫ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে পাবদা মাছ,যা মোট রপ্তানির ৮৮ শতাংশ।সার্বিক মাছ রপ্তানিতে ইলিশের অংশ ছিল প্রায় ৪ শতাংশ।এর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৮২ লাখ ৯২ হাজার ৫৫০ কেজি মাছ, যার মূল্য ২ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৭৫ ডলার। সেবারও রপ্তানির বড় অংশ ছিল পাবদা মাছ।

অন্যদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে মাছ আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৭০২ কেজি।এর আমদানি মূল্য ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯০ ডলার। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল প্রায় দ্বিগুণের বেশি মাছ,যা পরিমাণে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬ হাজার ৮৮২ কেজি। ওই মাছের আমদানি মূল্য ছিল ১ কোটি ৭৩ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ ডলার।

মাছের রপ্তানি বাড়লেও উৎপাদন খরচ নিয়ে মাছচাষিরা চাপের মুখে রয়েছেন। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকার মাছচাষি হারুন অর রশিদ জানান,তিনি ৬০ একর জলাশয়ে বিভিন্ন ধরনের সাদা মাছের চাষ করেন।এর মধ্যে পাবদা,তেলাপিয়া ও রুই জাতের মাছই বেশি।তিনি বলেন, ‘মাছের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে।বছর দুয়েক আগে ব্যাংক ঋণের সুদের হার ছিল এক অঙ্কে। এখন তা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।তার ওপর মাছের খাদ্য,বিদ্যুৎ ও শ্রমের খরচ বেড়েছে।এখন ২ কেজি আকারের রুই মাছ উৎপাদন করতে কেজিতে খরচ পড়ে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। ফলে মুনাফা নেমে এসেছে ১০ শতাংশে,যা আগে ৩০ শতাংশের মতো ছিল।বেশি বিনিয়োগে কম মুনাফা হওয়ায় চিন্তায় আছি।’

মাছচাষি ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান,যশোর জেলার ঝিকরগাছা,মনিরামপুর,শার্শাসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাবদা মাছের উৎপাদন বেড়েছে।বড় কারণ হলো,প্রতিবেশী ভারতে এই মাছের চাহিদা বাড়ছে।সে কারণে চাষিরা রুই,কাতলা ও পাঙাশের চাষ কিছুটা কমিয়ে পাবদা চাষে ঝুঁকছেন।

মাছচাষি হারুন অর রশিদ আরও বলেন,আমি সরাসরি রপ্তানি করি না।আমার কাছ থেকে পাবদা কিনে অনেকে ভারতে রপ্তানি করেন। আমি এখন মধ্যপ্রাচ্যে মাছ রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

ভারতে মাছ রপ্তানিকারক তারেক রহমান বলেন,আমি সব ধরনের মাছ রপ্তানি করি,তবে সবচেয়ে বেশি হয় পাবদা। বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি পাবদা মাছ রপ্তানি করি। কেজিতে ১৫ থেকে ১৬টা হয়,এমন পাবদার চাহিদা বেশি ভারতে।’

রপ্তানি বৃদ্ধি ও আমদানি কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মৎস্য বিভাগের বেনাপোল স্থলবন্দরের কোয়ারেন্টিন কর্মকর্তা সজীব সাহা প্রথম আলোকে বলেন,ভারতে বাংলাদেশি পাবদা মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন উপজেলায় এটির উৎপাদন বেড়েছে।এর মধ্যে যশোর অঞ্চল মাছ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত। তাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।এমনকি আখাউড়া সীমান্ত দিয়েও ভারতে যায়।মনে হচ্ছে,উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানির চাপ কমেছে।

আরও খবর

Sponsered content