প্রতিনিধি ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৩:২৭:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির মিত্রদের জন্য ছেড়ে দেওয়া ২৮টি আসন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।নির্বাচনের আগে এই আসনগুলোর ওপর দলীয় সমঝোতা,নেতাদের দল ত্যাগ এবং প্রতীক নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা ও বিশ্লেষণ মিলেমিশে চলছে।

সূত্র জানায়,বিএনপি ইতিমধ্যে দুই ধাপে ২৭২টি আসনে সম্ভাব্য একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে।এখনও ২৮টি আসন ফাঁকা রয়েছে।এসব আসনে ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের শরিকদের জন্য আসন ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা করেন,জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ৪টি আসন দেওয়া হবে।
দল ত্যাগ বনাম ভোটার আস্থা
নির্বাচনী জটিলতার কারণে অনিবন্ধিত দলগুলোর নেতারা নিজেদের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন,
> “অনিবন্ধিত দল হিসেবে আমরা ধানের শীষ জনপ্রিয় প্রতীক মনে করি।জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিজয়ী করতে আমার দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি এবং এই প্রতীকেই নির্বাচন করতে চাই।”
মিত্র দলগুলোর অন্তত ১০ জন শীর্ষ নেতা একইভাবে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।তবে নিবন্ধিত দলের অবস্থান আলাদা।উদাহরণস্বরূপ,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা-৮ আসনে প্রাথমিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন।কিন্তু সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রার্থী হওয়ায় এখন ঢাকা-১২ আসনে তার অবস্থান যাচাই হচ্ছে।তিনি স্পষ্ট করে বলেন,
> “নির্বাচনের আগে দল বদল করা মানুষের কাছে ইতিবাচক বার্তা দেয় না।আমরা আমাদের নিজস্ব ‘কোদাল’ প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কী বলছেন
বিশ্লেষকরা মনে করছেন,ভোটের আগে দল ত্যাগ সাধারণ ভোটারদের কাছে নেতিবাচক বার্তা হতে পারে।রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাব্বির আহমেদ বলেন,
> “শেষ মুহূর্তে একটি আসনের জন্য নিজের দল ভেঙে বিএনপিতে যোগ দেওয়া প্রমাণ করে ওই দলের কোনো সুনির্দিষ্ট আদর্শ ছিল না।এই চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া ইতিবাচক নয়।”
এছাড়া,রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন,বিএনপি যদি নির্বাচনী জোটের মধ্যে নিজস্ব প্রতীক ও আসনের সুনির্দিষ্ট সমঝোতা না করে,তাহলে তা ভোটার আস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।অনিবন্ধিত দলের হঠাৎ যোগ এবং নিবন্ধিত দলের নিজের প্রতীক ধরে থাকা—দুটোর মধ্যে ভোটারের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।
নির্বাচনের সময়সূচি
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী,আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,আসন সমঝোতা,দল ত্যাগ ও ভোটার আস্থা—এই তিনটি ফ্যাক্টর নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

















