প্রতিনিধি ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৫:২৩:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন-বর্তমানে দেশের সব জায়গায় ঘাটতি রয়েছে।বর্তমানে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলছে।

আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেড আই খান পান্না এ কথা বলেন।আজ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে একটি মামলা ছিল।তাঁর আইনজীবী হিসেবে আজকে ট্রাইব্যুনালে আসেন জেড আই খান পান্না।
ইনুর মামলার বিচারকাজ শেষে চলে যাওয়ার সময় জেড আই খান পান্না ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,দেশের সব জায়গায় ঘাটতি রয়েছে।এখান (ট্রাইব্যুনাল) থেকে তিনি নিরাপদে বাসায় যেতে পারবেন কি না,তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাসায় ঘুমাতে পারবেন,সেটারও নিশ্চয়তা নেই।
উদাহরণ দিয়ে জেড আই খান পান্না বলেন,তিনি গত ২৮ আগস্ট মঞ্চ ৭১ থেকে একটি গোলটেবিল বৈঠক ডেকেছিলেন। ইস্যু ছিল মহান একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের যাতে কোনো মর্যাদাহানি না হয় এবং বাহাত্তরের সংবিধানের সংরক্ষণ যাতে করা যায়—এটা নিয়ে আলোচনা।অতিথিদের অধিকাংশ ছিল ৭০ বছরের ওপরে।দু-তিনজনের মতো ছিল ৬০ বছরের ওপরে।সেখানে যারা আক্রমণ করল,মব করল, তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা হলো না।মামলা হলো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে।ফলে এই আইন,এই প্রশাসনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা থাকবে কোত্থেকে,সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন,আপনি কি বলতে চান রাষ্ট্রযন্ত্র এখন সঠিকভাবে চলছে না?জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন,সঠিকভাবে না,বেঠিকভাবে চলছে।উল্টাভাবে চলছে।’
এখানকার (ট্রাইব্যুনাল) বিচারব্যবস্থা কেমন—এমন প্রশ্নের জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘রাষ্ট্রের কি বাইরে এটা? এটা কি বাংলাদেশের বাইরে?’
ক্ষমতায় যারা থাকে,তারা টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে,এটা দেখে আসছেন উল্লেখ করে জেড আই খান পান্না বলেন,সারা পৃথিবীতেই তাই। হত্যাযজ্ঞে অপরাধীর অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।একটি হত্যারও শাস্তি হবে।কিন্তু প্রমাণ করতে হবে,গায়ের জোরে না।আর তিনি ব্যক্তিগতভাবে হত্যা ও মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে।এ কারণে কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে একটা মুহূর্তের জন্যও ট্রাইব্যুনালে আসেননি।কারণ,একটা লোককে ফাঁসি দেবে,রাইটলি অর রঙলি (সঠিকভাবে বা ভুলভাবে),এই যে মেরে ফেলা,এটার পক্ষে দেশে এটা চালু আছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেদিনই ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেন।
একই অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ইনুর বিরুদ্ধে একটি মিস কেস (বিবিধ মামলা) ছিল।আজকে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিবিধ মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়।ফলে আসামিপক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্নার আজকে এখানে কার্যক্রম ছিল না।
চলে যাওয়ার সময় জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন,ইনুর বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) দিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনাল-২-এ। ট্রাইব্যুনাল-২ সেটা আমলেও নিয়েছে।কিন্তু এই মামলা আগে থেকে ট্রাইব্যুনাল-১-এর তালিকায় ছিল।প্রসিকিউশনেরও একই কথা ছিল।যেহেতু ট্রাইব্যুনাল-২-এ ইতিমধ্যে এটা জমা হয়ে গেছে এবং আমলেও নিয়েছে,সে কারণে এখান থেকে ডিসচার্জ (খারিজ) করা হোক এবং ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও ইনুর একটি অডিও কলের কথোপকথন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, ইনুকে (আন্দোলনকারীদের) গ্রেপ্তার করে একদিন রেখে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।এ–ও বলেছেন যেন গুলি না চালানো হয়। সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে ভয় দেখাতে বলেছেন। এর মানে এটা নয় যে তিনি (ইনু) হত্যার জন্য উসকে দিয়েছেন।

















