প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ , ৬:০৫:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
রবিউল ইসলাম রবি॥স্কুলের ২৫ জোড়া বেঞ্চ,৫টি বৈদ্যুতিক পাখা গায়েব,সোলার প্যানেলের ব্যাটারি চুরি,২০ হাজার টাকার ক্রোকারিজ আইটেম সহ করোনা কালীন সময়ে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নির্মাণাধীন কার্যক্রমের মধ্যে ভুয়া ভাউচার করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এসব অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনক কারণে নেয়া হয়নি কোন আইনি পদক্ষেপ।তাই অনেকেই মনে করছেন,এ সকল ঘটনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন বরিশাল নগরীর ৪ নং ওয়ার্ড উলালঘূণী এলাকায় অবস্থিত ‘১৪৮ নং মকবুল হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এর প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন।তার ভাই মো. আতিকুর রহমান বরিশাল বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের স্টাফ হওয়ার প্রভাব বিস্তার করে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জুড়ে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে।
বিশ্বস্ত এক সূত্র জানায়,এ সকল অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা সহ প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন নিজেকে নির্দোষ সাজতে সম্প্রতি বিএমপি কাউনিয়া থানায় ব্যাকডেটে অভিযোগ বা সাধারণ ডাইরি দায়ের করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন কাছে উপরোক্ত বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে,তিনি নয় ছয় কথা বলতে শুরু করেন। প্রতিবেদক কোন পত্রিকার এবং কোন পদ মর্যাদার অধিকারী তা জানতে ব্যাকুল হয়ে উঠেন।প্রতিবেদকের তথ্য নেয়ার পরও তিনি তার কাছে জানতে চাওয়া তথ্যে দেননি।বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবে বলে জানান।
বরিশাল সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফয়সল জামিল বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছি।কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বর্তমানে ট্রেনিং এ রয়েছে।আসার পর তার কাছে জানতে চাওয়া হবে।
স্কুলের সাবেক কমিটির সদস্য ও ঠিকাদার মো. সেলিম হাওলাদার বলেন,করোনাকালীন সময় বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল।নির্মাণাধীন কাজের জন্য ৪০ হাজার ৭৭০ টাকা ব্যয় হয়েছিল।কিন্তু অফিস ভাউচারে কখন কি হয়েছে বা হয়নি তা আমি জানি না।
স্কুলের জমিদাতা সদস্য ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম (মনা) বলেন,বিদ্যালয়ের সিঁড়ির নিচের রুম থেকে সোলার প্যানেলের ব্যাটারি চুরি হয়েছে তা শুনেছি। কিন্তু অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১৪৮ নং মকবুল হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন ফরিদা ইয়াসমিন।তিনি যোগদানের পর থেকেই ওই সব ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনকভাবে নেয়া হয়নি কোন আইনি পদক্ষেপ।শহীদ মিনার নির্মাণ ব্যয় বাবদ সর্বমোট ৭০ হাজার টাকার ভাউচার করে রেজুলেশনের মাধ্যমে পাশ করিয়ে অতিরিক্ত ৩০ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানা গেছে। অফিস প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে ক্রোকারিজ ক্রয় করা হয়। তারমধ্যে অনেক ক্রোকারিজ হারানোর বিষয়টি সহকারী শিক্ষকদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় চুরির দায়ভার প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকগণের উপর চাপানোর চেষ্টা করেছিল। অসদাচরণ ও খামখেয়ালিপনা সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের আগমন-গমন সবই তার ইচ্ছামতো করতেন।
স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ সব অনিয়ম দুর্নীতির দর্শক হলেন,বরিশাল বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক মিজ নিলুফার ইয়াসমিন ও বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মো. আক্তারুজ্জামান।কারণ,বরিশাল বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মো. আতিকুর রহমান এর বোন হলেন প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন।তাই আতিকুর এর তদবির সুপারিশে অপরাধ করেও রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি সম্পর্কে আতিকুর রহমান ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলেও ধরেননি তিনি।

















