প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ১:২২:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল প্রতিনিধি॥বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থী এ হামলায় জড়িত নয় বলে জানান তারা।নিজেকে তারা নির্দোষ বলে দাবী করেন।এদিকে ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেও মামলার আসামী হবার দাবি করেছেন কেউ কেউ।বিষয়টি নিয়ে ববিতে শুরু হয়েছে আলোচনার পাশাপাশি সমালেচনা।চলমান বছেরর ২৫ জানুয়ারি ববির সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা শাখা) কে. এম. সানোয়ার পারভেজ লিটন ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দেন।পরে গত ২৭ জানুয়ারি সোমবারে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন বন্দর থানা পুলিশ।বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,গত ২৯ জুলাই শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কদের সভায় ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলোপাথারি হামলা করে।অভিযুক্ত ২৪ আসামি হলেন- হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল খায়ের আরাফাত,গণিত বিভাগের আবিদ হাসান,উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের রিয়াজ উদ্দিন মোল্লা,গণিত বিভাগের মোবাশ্বির রিদম,আইন বিভাগের রক্তিম হাসান,অর্থনীতি বিভাগের ছারোয়ার আহমেদ সাইফ(সাইদ),ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের খালেদ হাসান রুমি,আল সামাদ শান্ত,আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল,একাউন্টিং বিভাগের শরিফুল ইসলাম,রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুম্মান হোসেন,বাংলা বিভাগের রাকিবুল হাসান,রসায়ন বিভাগের নাহিদ রাফিন,ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবিক,বাংলা বিভাগের সাব্বির হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের টিকলী শরিফ,আইন বিভাগের শাহরিয়ার সান,শেখ মোহাম্মদ সাইফ,উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অশোক আলী,ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সিতাব খান, ইতিহাস বিভাগের ফারদিন খান,কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মোঃ সওকত হোসেন,ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইরাজ রব্বানি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার।
মামলার আসামী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রিয়াজ উদ্দিন মোল্লা বলেন,শিক্ষার্থীদের উপর হামলার দিন আমি ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলাম না। ২০২৩ সালে আমার মাস্টার্স সম্পন্ন হয়। কারো ব্যক্তি স্বার্থে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে আমাকে আসামী করা হয়েছে।আশাকরি পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা যাচাইপূর্বক পদক্ষেপ নিবে।
আরেক আসামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্মান হোসেন দাবি করেন,বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম।আন্দোলনে আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ এবং পুলিশি হামলায় আহত হই।থানায় অভিযোগ দেওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে আমাদের কয়েকজনের নাম ঢুকিয়ে দিয়ে দিলো। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মাহমুদুল হাসান তমাল সহ তার পক্ষের লোকজন এই হয়রানি করছে।কারণ,তমাল ও তমালের লোকজন আমাকে মারধর করেছিলো,সেজন্য তাদের নামে মামলা দিয়েছিলাম বলে আজ আমাকে ফাঁসালো।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন,আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এবং হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আমরা প্রথমে ১৯ জনের তালিকা পেয়েছিলাম।পরবর্তীতে থানায় অভিযোগ দেওয়ার আগে আবারো পাঁচজনের নাম আমাদেরকে জানায় একটি পক্ষ।পুলিশ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।পুলিশ তার আইন অনুযায়ী তাদের তদন্তের ভিত্তিতে বিচার প্রক্রিয়া করবে।যে নির্দোষ সে ছাড়া পাবে,সেটা একান্তই পুলিশের তদন্তের ব্যাপার।
বরিশাল বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান,বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে।

















