প্রতিনিধি ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ , ২:৪৫:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা।।রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে দেশের শীর্ষ দুই গণমাধ্যম প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সহিংসতা,ভাঙচুর,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।অভিযানের মধ্যে আরও জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

আজ (সোমবার) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তথ্যটি জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম।তিনি বলেন,ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অন্তত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
থানা-পুলিশ: মোহাম্মদ নাইম,মোহাম্মদ আকাশ,আহমেদ সাগর, মো. আবদুল আহাদ,মো. নজরুল ইসলাম (মিনহাজ),মো. জাহাঙ্গীর,মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. আবদুল বারেক শেখ (আল আমিন),রাশেদুল ইসলাম, সোহেল রানা,শফিকুল ইসলাম।
সিটিটিসি: মো. প্রান্ত শিকদার (ফয়সাল),আহম্মেদ প্রান্ত, আবুল কাসেম রাজু হোসাইন।
ডিবি: মো. সাইদুর রহমান।
গ্রেপ্তার নাইমের কাছ থেকে লুট করা নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে,যা দিয়ে তিনি একটি টিভি ও একটি টাচ ফ্রিজ কিনেছিলেন।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন,“প্রতিবাদ বা ক্ষোভ প্রকাশ আলাদা বিষয়,কিন্তু অফিসে ঢুকে আগুন দেওয়া,ভাঙচুর ও লুটপাট সম্পূর্ণ ভিন্ন।এগুলো ‘ব্যাড ইনটেনশন’ থেকে করা হয়েছে। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিনি জানান,হামলার সময় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল।পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সংযম দেখিয়েছে।কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
ঘটনার সূত্রপাত: ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯:৩০ মিনিটে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শাহবাগ মোড়ে মানুষ জড়ো হয়।রাত সোয়া ১১টা থেকে দিবাগত রাত ২টা-আড়াইটা পর্যন্ত প্রথমে প্রথম আলো, পরে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়।ফায়ার সার্ভিসকে বাধা দেওয়া হয় এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়।
ডিএমপি জানিয়েছে,প্রথম আলো ইতিমধ্যেই মামলা করেছে। ডেইলি স্টারের মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।
আইনি বিশ্লেষণ:
এই হামলা সাধারণ প্রতিবাদের মধ্যে পড়ে না।এটি ফৌজদারি অপরাধ,সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মব জাস্টিসের উদাহরণ,যা দণ্ডবিধি ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আসে।রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো আইনের শাসন বজায় রাখা,গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং সমাজে সহিংসতার বিস্তার রোধ করা।
ডিএমপি সুত্রে জানা গেছে,এই ঘটনায় যাদের সরাসরি অংশ রয়েছে,তাদের সবাইকে আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে। এছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে জনগণকে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করাচ্ছেন:গণমাধ্যমে হামলা মানে কেবল ভবন ভাঙচুর নয়,এটি রাষ্ট্রের ভিত্তি ও আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য।

















