লেখক ও কলামিস্ট এবং মন্তব্য কলাম:-

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ও ভারতের ‘তিন শর্ত’—বাস্তবতা কতটুকু?

  প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৬:৩৮:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে একটি দাবি ঘুরছে—ভারতের তিনটি শর্ত মেনে নিয়েই তারেক রহমান দেশে ফিরছেন।তবে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে বাংলাদেশ,ভারত বা বিএনপির পক্ষ থেকে এমন কোনো শর্তের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।

১️⃣ আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও নিরাপত্তা দেওয়ার শর্ত
কূটনৈতিক বাস্তবতায় একটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা প্রত্যাহার অন্য দেশের সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হয় না।

পালাতক নেতাদের নিরাপত্তা দেওয়া বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনি কাঠামোর বিষয়,ভারতের শর্ত নয়।➡️ তাই এই দাবি রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
২️⃣ ভারতের অনুমতি ছাড়া প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা যাবে না—এই দাবি
বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র।
প্রতিরক্ষা ক্রয় সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের অনুমতি সাপেক্ষে নয়।
বাস্তবে বাংলাদেশ চীন,তুরস্ক,রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশ থেকেও সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে। ➡️ এই শর্তটি রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক,তাই বাস্তবসম্মত নয়।

৩️⃣ জামায়াতকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে গণগ্রেফতার
কোনো রাজনৈতিক দলকে ‘জঙ্গি’ ঘোষণা করার এখতিয়ার আদালত ও রাষ্ট্রীয় আইনগত প্রক্রিয়ার।
ভারত বা অন্য কোনো দেশ এ বিষয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।➡️ এই দাবিটিও আইনগতভাবে দুর্বল।
তাহলে এসব দাবি কেন আসছে?
নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক উত্তেজনা
ভোটব্যাংক মেরুকরণ

ভারতবিরোধী আবেগ উসকে দেওয়া
প্রতিপক্ষকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে চিত্রিত করার কৌশল
এই কৌশলগুলো নতুন নয়—বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে।

বাস্তব কথা
তারেক রহমানের দেশে ফেরা যদি হয়,তা হবে আইনি ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে,কোনো বিদেশি “গোপন শর্তে” নয়—এমনটাই এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান।
প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের দাবি ছড়ালে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ও সামাজিক উত্তেজনা বাড়ে।
শেষ কথা
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে
👉 ঢাকা থেকে,
👉 সংবিধান থেকে,
👉 জনগণের ভোটে—
দিল্লি,ওয়াশিংটন বা অন্য কোনো রাজধানীর গুজবে নয়।
ধর্মীয় বা আবেগী স্লোগানের চেয়ে এখন সবচেয়ে জরুরি— তথ্য,প্রমাণ ও সংবিধানভিত্তিক রাজনীতি।

আরও খবর

Sponsered content