সারাদেশ

ডলারের জোগান বাড়ায় আমদানি বাড়ছে

  প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:০২:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।সাত মাস পর ডলারের জোগান বাড়ার পাশাপাশি এলসি (ঋণপত্র) খোলা সহজ হওয়ায় শিল্পের কাঁচামাল আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মার্চ মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৫০ লাখ টন ফার্নেস অয়েল, ভোজ্যতেল,কয়লা,স্ক্র্যাপ লোহা ও পাথর আমদানি হয়েছে; যা চলতি অর্থবছরে রেকর্ড।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মার্চ মাসে দেশে এসেছে ৫০ লাখ ১৯ হাজার টন শিল্পের কাঁচামাল।এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে রেকর্ড ৫ হাজার কোটি টাকা।অথচ আগের তিন মাসে অন্তত ১০ লাখ টন করে কম পণ্য আসে।এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে আসে ৩৯ লাখ ৭১ হাজার টন পণ্য,আর জানুয়ারিতে আসে ৪০ লাখ ৫৮ হাজার টন পণ্য।এ থেকে রাজস্ব আদায় হয় যথাক্রমে ৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা ও ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

এ ধারাবাহিকায় চলতি এপ্রিলেও রেকর্ড রাজস্ব আদায়ের আশা করছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন,আমদানি বাড়ার ফলে মার্চ মাসে আমাদের রাজস্ব আদায়ের হার বেড়েছে।একই ধারাবাহিকতা আমরা চলতি এপ্রিল মাসেও দেখতে পাচ্ছি।’

ডলারের জোগান বাড়ার পাশাপাশি এলসি খোলা সহজ হওয়ায় পণ্য আমদানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন,এখন যেহেতু আমরা ডলার সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।সে জন্য শিল্পের কাঁচামাল ও মেশিনারি আমদানি করা হচ্ছে।সেই সঙ্গে দেশের খাদ্যদ্রব্যও আমদানি করা হচ্ছে।’

কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী,শুধু মার্চ মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২৩ লাখ ৩২ হাজার টন সিমেন্ট ক্লিংকার,৬ লাখ ৪১ হাজার টন স্ক্র্যাপ লোহা,৫ লাখ ৭৫ হাজার টনের বেশি কয়লা,২০ হাজার ২০৬ টনের বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি হয়েছে। এ ছাড়া গার্মেন্টেসের কাঁচামাল আমদানি হয়েছে অন্তত ৫ লাখ টন।

এর আগে গত কয়েক মাসে বিদেশ থেকে স্ক্র্যাপ আমদানি বন্ধ হওয়ায় রডের দাম যেমন লাখের ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল, তেমনি বিদেশি পাথরের সংকটে বাধাগ্রস্ত হয়েছে মেগাপ্রকল্পের কাজ।কাজেই আমদানি বাড়ায় এবার বাজার স্থিতিশীল হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কেএসআরএম স্টিল লিমিডেটের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন,ইস্পাত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে এলসি অবাধে খুলে দিতে হবে,যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা যায়।’

এদিকে বছরের শুরুতে জ্বালানি তেলের মজুত ও সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও,তা কাটতে শুরু করেছে।মার্চ মাসে ৩ লাখ ৫৭ হাজার টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়েছে। যেখানে ফেব্রুয়ারিতে ১ লাখ ৯৯ হাজার টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়েছিল।এ ছাড়া মার্চে ২ লাখ ৫৫ হাজার টন ডিজেল ও ৫ হাজার ৮০১ টন লুব্রিকেন্ট অয়েল আমদানি করা হয়।আর ফেব্রুয়ারিতে ৩ লাখ টন ডিজেলে ও ২ হাজার ৪৬৬ টন লুব্রিকেন্ট অয়েল আমদানি করা হয়েছিল।

একই সঙ্গে আমদানি বেড়েছে ভোজ্যতেলেরও।মার্চে ১ লাখ ৫৭২ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করা হয়,যা আগের মাসে ছিল ৫৩ হাজার ৫৮ টন।

এদিকে চীনা নববর্ষের পর গার্মেন্টস এক্সেসরিজ আমদানি বাড়লেও,তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য বলে মনে করছেন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারির পর যখন চীনা হলিডে শেষ হলো, তারপর থেকে কারখানাগুলো খোলায় আমরা কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি।ফলে মার্চ মাসে আমদানি কিছুটা বাড়তি দেখাচ্ছে।’

উল্লেখ্য,বছরে বাংলাদেশ প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে।এর মধ্যে ৮ ধরনের ভোগ্যপণ্য এবং ২০ রকমের শিল্পের কাঁচামালের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।তবে গত বছরের আগস্ট থেকে ডলার সংকটে এসব পণ্য আমদানি কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছিল।

আরও খবর

Sponsered content