রাজনীতি

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (NDF) ১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

  প্রতিনিধি ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৩:৫৭:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা অফিস:হোটেল শেরাটন, বনানীতে জাতীয় পার্টি ও জেপির নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (NDF) ১১৯ আসনে ১৩১ জন প্রার্থী ঘোষণা করেছে।প্রেস ব্রিফিং-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন NDF জোটের প্রধান উপদেষ্টা জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু,সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং সমন্বয়ক ও মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

নতুন এই রাজনৈতিক জোটে জাতীয় পার্টি, জেপি,জাতীয় ইসলামী মহাজোট,তৃণমূল বিএনপি,বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট,বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি,এ্যাপ্লাইড ডেমোক্র্যাটিক পার্টি,ডেমোক্র্যাটিক পার্টি,নাগরিক পার্টি,গণতান্ত্রিক আন্দোলন, লিবারেল গ্রীন পার্টি,জাতীয় জোট,বাংলাদেশ জাতীয় দল, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি,জাসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগসহ অন্যান্য দলগুলো অংশ নিয়েছে।

ঘোষিত কিছু প্রধান প্রার্থী

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু,পিরোজপুর-২
শেখ শহিদুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ-২
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ,চট্টগ্রাম-৫
এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার,পটুয়াখালী-১
এডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু,কিশোরগঞ্জ-৩,মাদারীপুর-৩
শফিকুল ইসলাম সেন্টু,ঢাকা-১৩
লিয়াকত হোসেন খোকা,নারায়নগঞ্জ-৩
জহিরুল ইসলাম জহির,টাঙ্গাইল-৭
মোস্তফা আল মাহমুদ,জামালপুর-২

নতুন ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই সাবেক এমপি ও রাজনীতির অভিজ্ঞ নেতা।এছাড়া অনেকে তৃণমূল দল থেকে যোগ দিয়েছেন এবং জাতীয় পার্টি-জেপির পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলও অংশ নিচ্ছে।

একাধিক আসনে দুইজন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে,যেমন ঢাকা-১০,ঢাকা-১৭,ঢাকা-১৮,বরিশাল-৬,শেরপুর-১, শরিয়তপুর-১,বরগুনা-১,ঝালকাঠি-২,টাঙ্গাইল-৮, চট্টগ্রাম-৯।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন,NDF-এর এই ফ্রন্ট গঠন এবং একাধিক আসনে শক্তিশালী প্রার্থীর মনোনয়ন ঘোষণা বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রার্থীদের বৈচিত্র্য এবং অভিজ্ঞতা এই জোটকে কেন্দ্রে ধরে রাখছে,বিশেষ করে সাবেক এমপি ও মন্ত্রীদের অংশগ্রহণ ফ্রন্টের প্রভাব বাড়াচ্ছে।

দুইজন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে এমন আসনগুলোতে ভোট বিভাজন ও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।

অনাবাসিক ও তৃণমূল নেতা যারা মূল রাজনৈতিক দলের বাইরে থেকেও যুক্ত হয়েছেন,তারা ভোটার আস্থার একটি নতুন পরীক্ষা তুলে ধরেছেন।

আইন-শৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিবেশ

সংবাদ সম্মেলনে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার সতর্ক করেছেন যে,দেশে সার্বজনীন মব সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক সহিংসতা চলমান।তিনি উল্লেখ করেছেন,সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা যেমন:

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে আগুনের ঘটনায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সংকট

হিন্দু যুবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা ও তার মরদেহে আগুন

বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন ও শিশু কন্যার মৃত্যু

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অফিসে হামলা ও ভাঙচুর

হাওলাদার বলেন,এই পরিস্থিতিতে নিরাপদ,অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন,নির্বাচনের পরিবেশ যদি এইভাবে অস্থিতিশীল থাকে,তাহলে ভোটার আস্থা এবং নির্বাচনের বৈধতা উভয়ই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

উপসংহার

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ১১৯ আসনের প্রার্থী ঘোষণা রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করছে।সাবেক এমপি ও নেতা-নেত্রীদের অংশগ্রহণ,রাজনৈতিক বৈচিত্র্য এবং আইন-শৃঙ্খলার উদ্বেগ—সব মিলিয়ে এই জোট নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী,মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

আরও খবর

Sponsered content