সারাদেশ

চট্টগ্রাম থেকে ডিজিটাল সার্ভের (বিডিএস) আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হল-ভূমিমন্ত্রী,সাইফুজ্জামান চৌধুরী

  প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৩ , ২:১৬:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।ভূ-সম্পদ জরিপে সময় ও দুর্ভোগ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে ডিজিটাল সার্ভের (বিডিএস) আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হল চট্টগ্রাম থেকে।

রোববার নগরীর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) মিলনায়তনে ‘বিডিএস রোলআউট’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভের মূল উদ্দেশ্য অল্প সময়ে পুরো বাংলাদেশে ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে তথা ভূ-সম্পদ জরিপ শেষ করা এবং পরবর্তীতে মাঠে গিয়ে সার্ভের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে নিয়ে আসা।

“এছাড়া কোনো এলাকায় প্রাকৃতিক কারণে বড় ধরনের ভূমির বিচ্যুতি না ঘটলে রিভিশনাল সার্ভের প্রয়োজনীয়তাও থাকবে না ডিজিটাল ম্যাপ পার্টিশনের সুবিধার জন্য।”

প্রায় ১৩০ বছর আগে এই চট্টগ্রাম দিয়েই দেশে প্রথম বিজ্ঞানভিত্তিক জরিপ শুরু হয় জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন,চট্টগ্রামে শুরু হওয়া বিডিএস হবে মাঠে গিয়ে পরিচালিত শেষ জরিপ।”

অনুষ্ঠানে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন,আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের খসড়া সংসদে পাঠানো সম্ভব হবে।অবৈধ জমি দখলের দিন ফুরিয়ে আসছে।অবৈধ জমি দখলের জন্য জেল ও জরিমানা- দুটোরই ব্যবস্থা আছে এই আইনে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, “বিডিএস কার্যক্রমে একইসাথে অনলাইনে মৌজা ম্যাপ ও খতিয়ান পাওয়া যাবে।১৫ দিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সৃষ্ট দাগ সংশোধনের নকশাসহ খতিয়ান তৈরি হবে।“

এর আগে ২০২২ সালের ৩ অগাস্ট পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়ীয়া ইউনিয়নে বিডিএস পাইলটিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন ভূমিমন্ত্রী।

চট্টগ্রাম থেকে ডিজিটাল সার্ভে শুরু:-পাইলট প্রকল্পে সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রাম থেকে পূর্ণাঙ্গ বিডিএস কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়,চট্টগ্রাম,নারায়ণগঞ্জ ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন,ধামরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা (পৌরসভাসহ) এবং মানিকগঞ্জ পৌরসভার মোট ৬৩৪টি মৌজায় ৯৩৩ বর্গ কিলোমিটার (২ লাখ ৩৮ হাজার একর) এলাকায় ‘ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম স্থাপন’ (ইডিএলএমএস) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ের বিডিএস রোলআউট কার্যক্রম পরিচালানা করা হবে।।

বিডিএস জরিপে কী মিলছে ?

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভূমি মন্ত্রণালয় বলেছেন,বিডিএস-এ অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ে,নির্ভুলভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য স্যাটেলাইট,ড্রোন তথা ইউএভি এবং গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের সমন্বয়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ভূমি জরিপ,ভূমি ব্যবস্থাপনা অফিসের মধ্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠাসহ অটোমেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন হবে।

মৌজা-ম্যাপ ও রেকর্ডের মধ্যে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার ফলে ভূমির মালিকরা সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে রেকর্ড ও প্লট দেখার সুযোগ পাবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,বিডিএসের পুরো সিস্টেমটি জাতীয় ভূমিসেবা অটোমেশন সিস্টেমের একটি মডিউল হিসাবে সন্নিবেশ করা হবে।এ প্রকল্পের আওতায় নির্ধারিত জিও-রেফারেন্স-কৃত মৌজা ম্যাপ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্পে সরবরাহ করা হবে।এতে জমি বিক্রির পর নামজারি খতিয়ান পরিবর্তনের সাথে সাথে ম্যাপের সীমানা পরিবর্তন হয়ে যাবে।

বাংলাদেশে প্রথম ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) প্রোগ্রাম তথা ভূ-সম্পদ জরিপ কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছিল ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামুতে।

রামুর অভিজ্ঞতার আলোকে ১৮৯০ সালে চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়ে সমগ্র পূর্ববঙ্গে সিএস সার্ভে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয়,যা শেষ হয় ১৯৪০ সালের দিনাজপুর জেলায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম।

অন্যদের মধ্যে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল বারিক,বিডিএস কার্যক্রমের ইডিএলএমএস প্রকল্প পরিচালক জহুরুল ইসলাম,চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামের জোনাল সেটলমেন্ট অফিসার আফিয়া আখতারসহ ভূমি মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content