রাজনীতি

গাজীপুরের নতুন নগরমাতা নির্বাচিত হলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন

  প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২৩ , ৯:১৯:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঘোষিত ফলাফলে গাজীপুরের নতুন নগরমাতা নির্বাচিত হলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মাতা ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন।

গতকাল ফলাফল ঘোষনার শুরু থেকে শেষ রাত পর্যন্ত সারাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলো গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল। জাবেদা খাতুন অবশ্য এগিয়েই ছিলেন,তবুও রাত যত গভীর হয়েছে জাবেদা খাতুনের সমর্থকদের মাঝে উৎকন্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছিলো।

এমনকি রাত ১টায় যখন ৪৫০টির মতো কেন্দ্রের ফলাফলে জাবেদা খাতুন এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও কিছু অতি উৎসাহী আওয়ামী সমর্থক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুলেরমালা গলায় দেওয়া অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের ছবি দিয়ে তাকে নব নির্বাচিত গাজীপুরের নগরপিতা হিসাবে অভিনন্দন জানাতে শুরু করলে,সাধারণ মানুষও সন্দিহান হয়ে পড়ে- আসলেই ফলাফল বদলে দেওয়া হচ্ছে কি-না?

অবশ্য তেমন কিছুই শেষ পর্যন্ত ঘটেনি।জনগনের মতামতেরই প্রতিফলন ঘটেছে,জাবেদা খাতুন বেসরকারীভাবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন।

দেশের সবচেয়ে বড় এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহস্পতিবার(২৫ মে)দিনভর চোখ ছিল পুরো দেশের। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ; চলে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।মধ্যরাতে শেষ হয় ভোট গণনার কাজ।পরে রাত দেড়টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ ফরিদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।

সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী দারুস সালাম মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেওয়া শেষে নৌকা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেছিলেন-‘সবসময়ই আমি জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আজকে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে,আমি সেই রায় অবশ্যই মেনে নেব।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বলেছিলেন-‘জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী,১০০পারসেন্ট।গাজীপুর সিটি নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।ভোটের পরিবেশ সম্পর্কে জায়েদা খাতুন বলেছিলেন-‘আমার কোনো অভিযোগ নেই।এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো আছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান-গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আট প্রার্থী।এতে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।তাদের ভোটের ব্যবধান ১৬ হাজার ১৯৭।

(বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা)

এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট, সরকার শাহনূর ইসলাম হাতি প্রতীকে ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট, গণফ্রন্ট থেকে মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট,জাতীয় পার্টি থেকে লাঙল প্রতীকে এম এম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, জাকের পার্টি থেকে মো. রাজু আহাম্মেদ গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ২০৬ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন-অর-রশীদ ঘোড়া প্রতীকে ২ হাজার ৪২৬ ভোট পেয়েছেন।

এ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ছিল ৪৮০টি, আর ভোটকক্ষ তিন হাজার ৪৯৭টি। মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২, নারী পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৮ জন।

নির্বাচনে মোট ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ছিল ১০ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে প্রিসাইডিং অফিসার ৪৮০, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার তিন হাজার ৪৯৭ এবং পোলিং অফিসার ছয় হাজার ৯৯৪ জন।

আরও খবর

Sponsered content