অপরাধ-আইন-আদালত

গলাচিপায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ১৩ জুলাই ২০২৩ , ৫:৫৮:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

গলাচিপা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।পটুয়াখালীর গলাচিপায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার খ-কালীন শিক্ষক মো. ইব্রাহিম মাতব্বরের (৩৫ বছর অনুমান) বিরুদ্ধে সাড়ে পাঁচ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মাদ্রাসাটি গোলখালী ইউনিয়নের বড়মুল্লা গ্রামে।নিপীড়নের পর থেকে শিশুটি আতঙ্কে রয়েছে।ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সকালে।এ ঘটনার পর তিনদিন ধরে ঘরের দরজা জানালা খুলতে দেয়নি নিপীড়িত শিশুটি।নিপীড়নের পর শিশুটি বাড়ি ফিরে বমি করে অসুস্থ হয়ে পরে।এসব তথ্য শিশুটির মায়ের কাছ থেকে পাওয়া।ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহিম পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ইব্রাহিম এর বিচার চেয়ে তার বিরুদ্ধে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর একটি আবেদন করেন শিশুটির বাবা।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল অভিযোগ পেয়েছেন এবং ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে দেখছেন বলে তিনি জানান।
শিশুটির বাবা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড়মুল্লা গ্রামের দরিদ্র রাজ মিস্ত্রির সাড়ে পাঁচ বছরের শিশু সন্তানকে নুরানী-হাফিজি পড়ানোর জন্য গত তিন মাস আগে একই এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করান।প্রতিবেশী ও শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষার্থীর মা শিশুটিকে দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে শাক নিয়ে শিক্ষক ইব্রাহিমের বাড়িতে পাঠান।শাক নিয়ে শিক্ষকের বাড়িতে দিয়ে শিশুটি আবার নিজ বাড়ি ফেরার পথে ওই শিক্ষক (ইব্রাহিম) পড়াশোনার নানান কথা বলে শিশুটিকে শিক্ষকের নিজের গরুর গোয়াল ঘরের নির্জন এলাকার দিকে নিয়ে যায়।এক পর্যায়ে বিভিন্ন কথার পর শিশুটিকে যৌন নিপীড়ন করা হয়।ঘণ্টা খানেক পর শিশুটি বাড়ি ফিরে তার মায়ের কাছে বলে, ‘মা আমি মাদ্রাসায়ও যামু না,হুজুরের কাছেও যামু না।’ কী হয়েছে মা জানতে চাইলে শিশুটি সব কথা খুলে বলে।এর পর থেকেই শিশুটি বমি করে।আতঙ্কে ঘরের দরজা জানালা খুলতে দেয়নি।পরে ওই দিনই শিক্ষক ইব্রাহিমের স্ত্রীর কাছে শিশুটির মা সব ঘটনা খুলে জানান।

কিন্তু ইব্রাহিম পরের দিন সকালে শিশুটির বাড়ি এসে হাত পা ধরে ক্ষমা চান এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর অনুরোধ করেন।এর দুদিন পর ঘটনাটি মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. মোশাররফ হোসাইনকে (কানু মাতব্বর) জানানো হয়।

শিশুটির বাবা বলেন,আমার অবুজ সন্তানের সাথে যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে,এর বিচার আমি চাই। আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।

ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য খ-কালীন শিক্ষক ইব্রাহিমের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মা. মোশাররফ হোসাইন প্রথমে ইব্রাহিম তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কখনো ছিলনা জানালেও পরে খ-কালীন অবৈতনিক শিক্ষক ছিলেন বলে স্বীকার করেন।তিনি বলেন,ইব্রাহিম সম্পর্কে আমার ভায়ের ছেলে।তবে সে প্রথম দিকে কয়েকদিন শিক্ষকতা করেছেন।এখন আর তিনি আমাদের প্রতিষ্ঠানে নাই। তবে এ ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি। ইব্রাহিম কোথায় আছে তা আমার জানা নাই।

এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন,আমি ঘটনা আজই শুনেছি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছি।

এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন,শিশুটির বাবা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।আমি গুরুত্বের সাথে অভিযোগটি বিবেচনা করছি।ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content