প্রতিনিধি ১ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৫:৩৬:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।রাজনৈতিক জীবনে দোষ-ত্রুটি সবারই থাকে।শেখ হাসিনা আজ পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে যে পরিমাণ মানবিকতা দেখিয়েছে খালেদা জিয়া যদি তার এক-চতুর্থাংশও দেখাতো তাহলে এই দেশের রাজনীতিতে এতো ঘৃণার চাষাবাদ হতো না।২০০৭-২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা করেছিলো।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ১৩ টির মধ্যে ৯ টি মামলাই খারিজ করে দেয়।৪ টি মামলা খারিজ করেনি,কারণ সেগুলো রাজনৈতিক মামলা ছিলো না।২০১৫ সালে সাংবাদিক মুন্নি সাহা খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করেন,দুই মাসের আন্দোলন ও ১২১ প্রাণের বিনিময়ে বিএনপি কি পেয়েছে?জবাবে খালেদা জিয়া বলেন,জনগণের সমর্থন পেয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হয়।এই মামলা আওয়ামী লীগের আমলে করা নয়। আওয়ামী লীগ বরং খালেদা জিয়ার ৯ টি মামলা খারিজ করে দিয়েছে।শেখ হাসিনার সরকার খালেদা জিয়াকে নিজের পছন্দের গৃহকর্মীকে সাথে নিয়ে কারাগারে থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন।দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী কে কবে এই সুযোগ পেয়েছে?
খালেদা জিয়া কারাগারে গিয়েছিলো ৫ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে।খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে ২ বছরের মাথায় নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত করেন শেখ হাসিনা।শেখ হাসিনা যদি খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত না করতো তাহলে কি হতো?কিছুই হতো না।শেখ হাসিনা এটা করেছিলেন মানবিক কারণে,মহানুভবতা দেখিয়ে।
২০১৩ সালের অক্টোবরে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ফোন করেন একসাথে বসে সংলাপ করার জন্য।শেখ হাসিনা সালাম দিয়ে বিনয়ের সাথে কথা শুরু করলেও খালেদা জিয়া প্রথম কথা থেকেই ঝগড়া ও ধমকাধমকি শুরু করে দেয়।খালেদা জিয়ার ধামকাধমকির কারণে সংলাপ আর আলোর মুখ দেখলো না।
খালেদা জিয়ার সন্তান আরাফাত রহমান কোকো মারা গেলে একজন মা হিসেবে শেখ হাসিনা ছুটে যান খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে।হুট করে যান নি,প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানিয়েই গিয়েছিলেন।অথচ শেখ হাসিনা পৌঁছার সাথে সাথে খালেদা জিয়ার অফিসের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।কিছুক্ষণ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসেন তিনি।
খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়।উদ্দেশ্য শেখ হাসিনাকে হত্যা করা।আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী মারা যায়।শেখ হাসিনাসহ আর ৩০০ জন আহত হন।খালেদা জিয়া সমবেদনা জানানো তো দূরে থাক,উল্টো বিদ্রুপ করে বলে,শেখ হাসিনা ভেনিটি ব্যাগে বোমা এনে ফাটিয়েছে!
এতো ভয়াবহ বোমা হামলা হয়েছে,অথচ খালেদা জিয়ার সরকার মামলা পর্যন্ত নিতে চায়নি।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার করেছে।খালেদা জিয়ার সন্তান ও মন্ত্রীসভার সদস্যরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে,শেখ হাসিনা চাইলে খালেদা জিয়াকে এই মামলায় জড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিতে পারতেন,যেভাবে ইউনুসের আদালত শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড দিলো।কিন্তু শেখ হাসিনা সে পথে হাঁটেন নি।
এই মহানুভবতার প্রতিদান খালেদা জিয়া দিয়েছে শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করে।
যেই নারী বয়সের ভারে নিজেই চলাফেরা করতে পারে না, সারাক্ষণ চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হয় তিনি আবার আরেকজনের ফাঁসির রায় শুনে সন্তোষ প্রকাশ করে!

















