প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:১১:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।বাংলাদেশ আজ এক গভীর অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।আগুনে পুড়ছে শুধু মানুষ নয়—পুড়ছে প্রতিষ্ঠান,পুড়ছে সংস্কৃতি,পুড়ছে মতপ্রকাশের শেষ আশ্রয়গুলো। যে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় মুক্তচিন্তা ও প্রগতির প্রতীক ছিল—প্রথম আলো,ডেইলি স্টার,ছায়ানট,উদীচী—আজ সেগুলোও মবের আগুনে আক্রান্ত। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি একটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার ধারাবাহিক ফল।

ভালুকায় দীপু দাসকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। শরিফ ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।প্রশ্ন উঠছে—রাষ্ট্র তখন কোথায় ছিল? উত্তর ভয়াবহ: রাষ্ট্র ছিল নির্বিকার, নীরব দর্শক।
যে সহিংসতা শেখ হাসিনার দীর্ঘ ও বিতর্কিত শাসনামলেও অনেক ক্ষেত্রে অকল্পনীয় ছিল,ইউনূসীয় শাসনে তা কীভাবে “স্বাভাবিক” হয়ে উঠল—এটাই আজকের সবচেয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন। জঙ্গিবাদ দমন তো দূরের কথা,আজ জঙ্গিরাই সামাজিক ও ধর্মীয় পরিসরে ইমামতি করছে।বিচারব্যবস্থা একের পর এক ঐতিহাসিক সন্ত্রাসের দায় মুছে দিতে ব্যস্ত—যেন স্মৃতি মুছে ফেললেই অপরাধ মুছে যায়।
আইন এখন আর ন্যায়বিচারের প্রতীক নয়; আইন মানে শক্তির দখল।নিরাপত্তা মানে রাষ্ট্র নয়—মব।ন্যায়বিচার মানে আদালত নয়—অস্ত্র।এই বাস্তবতায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সতর্কতায় বর্ণনা করা হচ্ছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ভাষায়। এটি কেবল কূটনৈতিক অপমান নয়; এটি একটি রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতার ধস।
সবচেয়ে বেদনাদায়ক হলো—মিডিয়ার নীরবতা,বুদ্ধিজীবীদের দ্বিচারিতা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির সুবিধাবাদী ভণ্ডামি।যারা একসময় মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বুলি আওড়াত,তারা আজ আগুনের ধোঁয়ায় চোখ বুজে আছে।
রাষ্ট্র যখন নৈতিক দিকনির্দেশনা হারায়,তখন সহিংসতা নীতিতে পরিণত হয়।আর যখন সহিংসতা নীতি হয়ে ওঠে,তখন একটি দেশ ধীরে ধীরে ছাই হয়ে যায়।
প্রশ্ন তাই একটাই—এই দেশ যদি ছাই হয়ে যায়,সেই ছাই দিয়ে কী করবেন, ইউনুস?

















