অপরাধ-আইন-আদালত

এবার আমাকে রাখা হচ্ছে ফ্লোরে-মির্জা আব্বাস

  প্রতিনিধি ৫ নভেম্বর ২০২৩ , ২:১১:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আদালতে বলেছেন,এর আগেরবার যখন আমি ও মির্জা ফখরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল,তখন আমাকে ও মির্জা ফখরুলকে কারাগারে ফাঁসির সেলে রাখা হয়েছিল। এবার আমাকে রাখা হচ্ছে ফ্লোরে। এবার তো হেঁটে আসছি। এর পরেরবার হয়তো হুইল চেয়ারে করে আমাকে আসতে হবে।’

রোববার (৫ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে হাজির করা হয়।এসময় তার আইনজীবী কারাগারে ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন।শুনানির এক পর্যায়ে বিচারককে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।

এসময় বিচারক বলেন,আমরা তো হাইকোর্টের মতো সরাসরি আদেশ দিতে পারি না।আপনারা আবেদন করেছেন তা আমি দেখবো।

এরপর বিচারক মির্জা আব্বাসের আইনজীবীকে বলেন,উনার কি আর কোনো মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে?এসময় মির্জা আব্বাস বলেন,না,চাওয়া হয়নি।তখন বিচারক বলেন,আজ আদেশ কী দেয় দেখেন।না হলে ৮ নভেম্বর মামলার ধার্য তারিখে শুনবো এ বিষয়ে।তখন মির্জা আব্বাস বলেন,আজ তো হেঁটে উঠেছি।কারাগারে এভাবে চলতে থাকলে ওইদিন হয়তো হুইল চেয়ারে করে আসতে হবে।

মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল আজ।এদিন মির্জা আব্বাসের আইনজীবী শাহিনুর রহমান ও আমিনুল ইসলাম সাফাই সাক্ষী নিতে আবেদন করেন।আদালত তাদের আবেদন গ্রহণ করেন।এরপর সাফাই সাক্ষীর জন্য ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে,এদিন মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করা হয়।এরপর বিচারক তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান। এসময় মির্জা আব্বাসের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।আদালত এ বিষয় আদেশ দেননি।

গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করতে প্রডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করা হয়।এদিন মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল।মির্জা আব্বাস গ্রেফতার হয়ে শাহজাহানপুর থানার এক মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে।এরপর তাকে ৫ নভেম্বর আদালতে হাজির করতে প্রডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত।

গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর মঞ্জুরুল ইমামের আদালত মির্জা আব্বাসের জামিন বাতিল করে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।ওইদিন এ মামলার সাফাই সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য ছিল।তবে আসামি মির্জা আব্বাস ও সাফাই সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে মির্জা আব্বাসের জামিন বাতিল করেন।একই সঙ্গে এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে।এ অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জুন আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।এ মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর শহীদবাগে অভিযান চালিয়ে মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়।পরদিন বুধবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়।এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এরপর আজ রোববার রিমান্ড শেষে ঢাকার আদালতে তাকে হাজির করা হয়।মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম।এরপর তাকে দুর্নীতি মামলায় প্রডাকশন ওয়ারেন্ট মুলে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

আরও খবর

Sponsered content