জাতীয়

আমরা শান্তি চাই-শান্তির পথেই আমরা এগিয়ে যাবো-প্রধানমন্ত্রী,শেখ হাসিনা

  প্রতিনিধি ২৮ মে ২০২৩ , ১:০৬:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,আমরা শান্তি চাই। শান্তির পথেই আমরা এগিয়ে যাবো।ইনশাল্লাহ এদেশে কোন মানুষ হতদরিদ্র থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না।ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে আমরা যথেষ্ট অগ্রগামী।এই অভিযাত্রা আমাদের অব্যাহত থাকবে।আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে রোববার (২৮ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশকে আমরা উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।সেই পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি ২০৪১ সালের মধ্যে।আমরা আর অশান্তি চাই না, সংঘাত চাই না।শুধু শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে অব্যহত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ।কাজেই একটা শান্তিপূর্ণ,স্থিতিশীল পরিবেশ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সহায়ক।সেই কথাটা সব সময় আমাদের মনে রাখতে হবে।জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন, শান্তির বাণী শুনিয়েছেন, কিন্তু নিজেকে জীবন দিতে হয়েছে।আমরা আর চাই না অশান্তি,সংঘাত।আমরা চাই মানুষের জীবনের উন্নতি। সেই কামনাই আমরা সব সময় করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর অশান্ত পরিবেশ, প্রতি রাতে কার্ফিউ।দীর্ঘ ২১ বছর আমরা ১৯৯৬ সালে এসেছিলাম সরকারে তখন কিছু উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছিলাম।অন্তত আমরা এইটুকু বলতে পারি।ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, মাঝখানে আবার একটা অশান্ত পরিবেশ। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে একটা শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজমান বলেই আজকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।

টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করেছে বলেই আমরা দারিদ্রের হার কমাতে পেরেছি, সাক্ষরতার হার বাড়াতে পেরেছি, মানুষের আয়ুস্কাল বাড়াতে পেরেছি, মাতৃমৃত্যূহার কমাতে পেরেছি।মানুষ এখন আর ভিক্ষা করে চলবে না।নিজের মর্যাদা নিয়েই চলবে সেটা আমাদের লক্ষ্য।

গত সাড়ে ১৪ বছরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন,বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ ছিল, আজকে আমরা তা ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।যেখানে আমাদের হতদরিদ্র ছিল ২৫ দশমিক ৯ ভাগ।সেটা এখন আমরা ৫ দশমিক ৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি।প্রতিটি মানুষ অন্তত তাদের মৌলিক অধিকার পাবে, অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এটা জাতির পিতার লক্ষ্য।সেই লক্ষ্য আমরা বাস্তবায়ন করে যাবো।আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,প্রতিনিয়ত স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হচ্ছে।আমি জানি যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে,যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি,প্রতিনিয়ত তাদের প্রতিবন্ধকতা আমাদের অতিক্রম করতে হয়।

শেখ হাসিনা বলেন,বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন,জনগণই শক্তি, জনগণই ক্ষমতার উৎস।আমি সেই বিশ্বাসে বিশ্বাসী। সেই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথচলা।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা শান্তিতে বিশ্বাস করতেন।কি দুর্ভাগ্য যিনি শান্তির কথা বলে গেছেন তাকেই জীবনটা দিতে হলো, যে দেশের মানুষকে তিনি গভীরভাবে ভালোবেসেছিলেন সেই মানুষের কিছু অমানুষের হাতে।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে সারা বিশ্বের শান্তি রক্ষায় অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা ১ নম্বর দেশে হিসেবে সারা বিশ্বের শান্তি রক্ষা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, সব সময় আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে চাই।

আগামীতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ দেওয়ার ঘোষণা দিতে শেখ হাসিনা বলেন,এটা আমরা দেবার ব্যবস্থা নিবো।এইটুকু আমরা বলতে চাই।আমরা শান্তি চাই। শান্তির পথেই আমরা এগিয়ে যাবো।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও গবেষক মোনায়েম সরকার।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী,বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ পিস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মোজাফফর হোসেন পল্টু।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু জুলিও-কুরি শান্তি পদক গ্রহণের একটি ভিডিও ডক্যুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন এবং একটি স্যুভেনির মোড়ক উন্মোচন করেন।

আরও খবর

Sponsered content