আন্তর্জাতিক

অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা

  প্রতিনিধি ২১ মার্চ ২০২৪ , ৬:১০:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যানড্রুজ বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।বুধবার (২০ মার্চ) তিনি বলেছেন,এমন অবস্থায় থাকার পর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাতে পারে বিশ্ব।খবর জাপান টাইমসের।

তিনি বলেন,সামরিক বাহিনীর ভিতর বিপুলসংখ্যক সদস্য হতাহত হচ্ছেন।তাদের অনেকে পক্ষ ত্যাগ করছেন। আত্মসমর্পণ করছেন।এ ছাড়া বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার যে নীতি চালু হয়েছে,তাতে সেনা সদস্যের সংখ্যা কমছে।এর ফলে অস্তিত্বের সঙ্কটে আছে সামরিক জান্তা। তাদের পক্ষে আইন শৃংখলা ও মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য যারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছেন,তারাও তাতে হেরে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য,২০২১ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তা।তারপর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সুচিকে তারা বন্দি করে।তার সময়কার প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিপরিষদ ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিকদের গ্রেপ্তার করে।এর প্রতিবাদে ক্ষোভে জ্বলে ওঠে মিয়ানমার।

সাধারণ মানুষ সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ভয়াবহ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপগুলো।তাদের ধারাবাহিক আক্রমণে সেনাবাহিনী পর্যুদস্ত হওয়ার পথে।এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক এলাকা সেনাদের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।

এর প্রেক্ষিতে টম অ্যানড্রুজ বলেন,মিয়ানমারে সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা,অর্থনৈতিক অবনমন ও আইনহীনতার জন্য মূল চালিকা শক্তি হলো সামরিক জান্তা।আর্থিক প্রবাহ ও সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জামের ওপর নিষেধাজ্ঞায় সামরিক জান্তার অপারেশন মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।

এক্ষেত্রে তিনি সিঙ্গাপুরের নাম উল্লেখ করেন।এ দেশটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে সামরিক ব্যবহারের জন্য সরঞ্জাম বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে।ফলে গত বছর মিয়ানমারে তাদের সরবরাহ দেয়া অস্ত্রের পরিমাণ শতকরা ৮৩ ভাগ কম হয়েছে।

কিন্তু তিনি বলেন,এমন ঘটনা ঘটেনি রাশিয়া ও চীনের ক্ষেত্রে।তারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে অস্ত্র সরবরাহে যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে।সামরিক জান্তার টুটি চেপে ধরার জন্য আর্থিকভাবে আরও অনেক কিছু করা যেতে পারে।

তিনি বলেন,আমরা কিভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করছি তার মৌলিক পরিবর্তন দরকার।এটা আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট উপায়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে হবে।মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে বাকি বিশ্বের ব্যাংকিং ও আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে তদন্ত করছেন টম অ্যানড্রুজ।এ নিয়ে বছরের শেষের দিকে রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা তার।

বিশ্ব যেহেতু অন্য যুদ্ধগুলোতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, তখন মিয়ানমারের ভবিষ্যতের দিকে বৈশ্বিক দৃষ্টির অভাব রয়েছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।টম বলেন,সামারিক জান্তা মাশরুমের মতো।তারা অন্ধকারে বেড়ে ওঠে।

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ক্ষেত্র,মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা গুরুত্বপূর্ণ।দেশটির ভিতরে যে সাধারণ মানুষ আছেন তাদেরকে আরও সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও অনেক কিছু করতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content