সম্পাদকীয়

রাষ্ট্র ও মৃত্যুর ‘গোপনীয়তা’: প্রশ্নের অধিকার কি মানা যাবে না?

  প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৯:৩৬:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।সম্প্রতি একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।কথিত হাদি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর সরকার ঘোষণা করেছে—মরদেহ দেখানো যাবে না।তাকে রাখা হবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে, বং জানাযা অনুষ্ঠিত হবে সংসদ ভবনের প্রাঙ্গণে।

এই সিদ্ধান্তই যে সরাসরি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে,তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়।

প্রথম প্রশ্ন—মরদেহ দেখানো যাবে না কেন?
মৃত্যুকালে একটি মানুষের মর্যাদা রক্ষা করা অবশ্যই জরুরি। কিন্তু যদি সরকারি স্বার্থ বা রাজনৈতিক কারণে মরদেহ লুকানো হয়,তখন সেটি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও স্বচ্ছতার অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

দ্বিতীয় প্রশ্ন—পরিচয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার?
মৃত্যুর ঘটনায় পরিচয় নিশ্চিত করা মৌলিক।সরকার, পরিবার,বা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান—কেউই এই দায়িত্ব এড়াতে পারে না।স্বচ্ছতার অভাবে কেবল গুজব ও সন্দেহ জন্মায়।

তৃতীয় প্রশ্ন—হিমঘরে রাখা মানে কী লুকানো হচ্ছে?
হিমঘরে রাখা মানে কেবল দেহ সংরক্ষণ নয়; কখনও কখনও এটি ব্যবহার করা হয় তথ্য বা ঘটনার প্রকৃত চিত্র লুকানোর জন্য।যখন রাষ্ট্র “বিশ্বাস করুন” বলে, আর প্রশ্ন করা মানা করে—ঠিক তখনই জনগণকে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন করতে হয়।

রাষ্ট্রের কর্তব্য হল স্বচ্ছতা বজায় রাখা,জনগণের প্রশ্নের সম্মান করা,এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা।যেখানে গোপনীয়তা অতিমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়, সেখানে সন্দেহ ও বিভ্রান্তি বাড়ে।

শেষ কথা: মৃত্যুর সম্মান রক্ষা এবং রাষ্ট্রের স্বচ্ছতা একে অপরের পরিপূরক।কোনও সিদ্ধান্ত জনগণকে সন্দেহের মধ্যে রাখার জন্য হওয়া উচিত নয়।যেখানে প্রশ্ন মানা,সন্দেহ বেড়ে যায়,সেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতা,স্বচ্ছতা ও প্রশ্ন করার অধিকারই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।

আরও খবর

Sponsered content