প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১:৪৪:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।ভয় না করে জয় করাই সাংবাদিকতা।হাজারো পেশার মধ্যে সাংবাদিকতা একটি মহৎ ও সম্মানজনক পেশা।তবে এর সঙ্গে আর অন্য দশটি পেশার পার্থক্য অনেক।
একজন ভালো ও পেশাদার সাংবাদিক হওয়ার জন্য কি কি প্রয়োজন? আজকের প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত সাংবাদিকদের অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশুনা করে এসেছেন।ভালো সাংবাদিক হওয়ার জন্য সাংবাদিকতাই পড়তে হবে এমনটা জরুরি নয়।তবে বিষয়টি পড়া থাকলে একজনকে ভালো সাংবাদিক হতে তা অবশ্যই সাহায্য করে।
সাংবাদিকদের ‘সব কাজের কাজী’ হতে হয়।অর্থাৎ অনেক বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকা একজন সাংবাদিকের জন্য জরুরি। সেটা খেলা,অর্থনীতি ও বাণিজ্য,আইন-আদালত,সংবিধান, জ্বালানির মতো বিষয় হতে পারে।একজন সাংবাদিক হলেন একজন ব্যক্তি যিনি পাঠ্য, অডিও বা ছবির আকারে তথ্য সংগ্রহ করেন, এটিকে একটি সংবাদযোগ্য আকারে প্রক্রিয়াকরণ করেন এবং জনসাধারণের কাছে তা ছড়িয়ে দেন ।একে বলে সাংবাদিকতা।সাংবাদিকপেশা।

সাংবাদিকদের কলম আর ক্যামেরা কারো কাছে মাথা নত করে না।কলম যতই দামী হোক ভিতরে কালি না থাকলে মূল্যহীন…!মানুষ যতই শিক্ষিত হোক ভিতরে বিবেক না থাকলে তা মূল্যহীন.নে রাখবেন:-অসৎ লোক কাউকে সৎ মনে করে না!!
১.সাংবাদিক মানে জাতির বিবেক।২. সাংবাদিক মানে দেশ প্রেমিক।৩.সাংবাদিক মানে কলম সৈনিক।৪.সাংবাদিক মানে জাতির দর্পন।৫. সাংবাদিক মানে জাতির সেবক।৬.সাংবাদিক মানে শিক্ষিত।৭.সাংবাদিক মানে স্বাধীন।৮.সাংবাদিক মানে সম্মানি জাতি।৯.সাংবাদিক মানে তদন্ত করা।১০.সাংবাদিক মানে আইন বিষয়ে জানা।
একজন সাংবাদিকের গুণাবলি:-শারীরিক সক্ষমতা থাকতে হবে।চারিত্রিক গুণসম্পন্ন হতে হবে।সাংবাদিককে হতে হবে বুদ্ধিমান।কাল্পনাশক্তির অধিকারী হতে হবে।স্মৃতিশক্তির অধিকারী হতে হবে।বন্ধুভাবাপন্ন হতে হবে।উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী হতে হবে।স্নায়ু খুব শক্ত হতে হবে।তীক্ষ্ণতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।সহনশীল হতে হবে।সাংঠনিক শক্তি থাকতে হবে।সময়নিষ্ঠ হতে হবে।সাংবাদিককে পেশার প্রতি সৎ হতে হবে।জীবনবাদি, জীবনঘনিষ্ঠ হতে হবে।পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকা চাই।সাংবাদিককে উদ্যোগী হতে হবে।সামাজিক হতে হবে, মানুষের প্রিয়ভাজন হতে হবে।মানুষের সাথে মেশার ক্ষমতা থাকতে হবে।কাণ্ডজ্ঞানের পরিচয় দিতে হবে।মানুষের গোপনীয়তা,প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।অনুসন্ধানে লেগে থাকতে হবে।ভালো সংবাদ চেতনা থাকতে হবে।ক্যু শনাক্ত করার ক্ষমতা থাকতে হবে।তথ্যের ক্রমাবর্ধন নির্ধারণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ থাকতে হবে।প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকতে হবে।অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডারনিরপেক্ষ ও বর্ণবাদমুক্ত হতে হবে।প্রচুর পাঠাভ্যাস থাকতে হবে।
প্রিন্ট মিডিয়া ( পত্রিকা, ম্যাগাজিন, সাময়িকী ইত্যাদি) : সম্পাদকীয় বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ, বার্তা বিভাগ, রিপোর্টিং বিভাগ, প্রুফ এডিটিং বিভাগ, ফটোগ্রাফি বিভাগ, অলংকরণ বিভাগ, বিজ্ঞাপন বিভাগ, প্রচার বিভাগ, রেফারেন্স লাইব্রেরি, প্রিন্টিং/ছাপা বিভাগ।
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া (রেডিও, টেলিভিশন) : নিউজ বিভাগ-রিপোর্টিং, নিউজ এডিটর, জয়েন্ট নিউজ এডিটর, ডেস্ক রিপোর্টার, নিউজ প্রডিউসার, নিউজ প্রেজেন্টার, অনলাইন এডিটর, প্রোগ্রাম প্রডিউসার, ভিডিও এডিটর, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, এনিমেটর, সেট ডিজাইনার, চিত্রগ্রাহক, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ব্রডকাস্টিং এক্সিকিউটিভসহ নানা ধরনের কর্মসংস্থান। ইলেক্ট্রনক মিডিয়ায় সাধারণত নিয়ম হলোথ যেকোনো বিভাগে আপনি কাজ করতে প্রথমেই জানতে হবে বেসিক জার্নালিজম।
অনলাইন মিডিয়া : বাংলাদেশে পূর্বে প্রিন্ট মিডিয়া ( সংবাদপত্র) ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কাজের সুযোগ থাকলেও বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে আরেকটি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।সেটি হলো- অনলাইন মিডিয়া।
সম্পাদকীয় বিভাগ,প্রশাসনিক বিভাগ,বার্তা বিভাগ,রিপোর্টিং বিভাগ, প্রুফ এডিটিং বিভাগ, ফটোগ্রাফি বিভাগ,অলংকরণ বিভাগ,বিজ্ঞাপন বিভাগ,রেফারেন্স লাইব্রেরি।এছাড়াও এর চেয়ে কমবেশি বিভাগ থাকতে পারে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে ঐ প্রতিষ্ঠানের উপর।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একথা স্বীকার করতেই হবে, এ পেশায় আজও সিংহভাগ জনশক্তিই অনাড়ি। তারা অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী ও প্রশিক্ষণহীন।সাংবাদিকতায় পড়ালেখা করে এ পেশায় এসেছেন এমন লোকের সংখ্যা নিতান্ত নগন্য। পড়ালেখা করাতো দূরে থাক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এমন লোকই বা কোথায়। অথচ একটি সম্ভাবনাময় ও চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা আজ দেশে-বিদেশে অনেক উঁচু মাপের পেশা।পৃথিবীতে যতগুলো পেশা আছে সাংবাদিকতা তার মধ্যে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে।সাংবাদিকতায় অধ্যায়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ পেশায় প্রবেশ করতে পারলে একটি সম্ভাবনাময় ও উজ্জ্বল ক্যরিয়ার গড়া সম্ভব।
সাংবাদিক হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা : ১. জাতীয় পত্রিকা/অনলাইন/ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করতে হলে তাকে কমপক্ষে অর্নাস অথবা সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে।তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা মফস্বলের ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। সাংবাদিকতার উপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর থাকলে ভালো। সাংবাদিকতায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও সাংবাদিকতার উপর যেকোনো কোর্স করলে সহজেই সাংবাদিকতার পেশায় হাতেখড়ি হতে পারে।একটি সফল সর্ট কোর্সের পর পিজিডি ও মাস্টার্স করতে পারলে সাংবাদিক হিসাবে একটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়ানো সম্ভব।
কোথায় করবেন কোর্সঃ যাদের পক্ষে এখন আর সাংবাদিকতায় স্নাতক করা সম্ভব নয়,তারাও করে নিতে পারেন ৬মাস, একবছর বা ২ বছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর বা ডিপ্লোমা অথবা সার্টিফিকেট কোর্স।দেশের সরকারি বে-সরাকারি বহু প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের কোর্সকরার সুযোগ রয়েছে।বাংলাদেশ তথ্য অধিদপ্তর,প্রেস ইনস্টিটিউট বা প্রেস কাউন্সিলসহ প্রথম আলো, নয়দিগন্তসহ অনেক বেসরকারি ইলেক্ট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এখন এসকল কোর্স চালু করেছে।ঢাবি,রাবি’সহ দেশের কয়েকটি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতায় স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর কোর্স রয়েছে।তাছাড়া রয়েছে ১ ও ২ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স।কোর্স করে আপনি বিভিন্ন পত্রিকায় আপনার লেখা পাঠাতে থাকুন ও সেই সঙ্গে আপনার বায়োডাটাও পাঠাতে থাকুন।
ভর্তির যোগ্যতাঃ স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে যে কোন বিভাগ থেকে এইচএসসি পাশ হতে হবে।আর স্নাতকোত্তর বা ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে স্নাতক পাশ হতে হবে।
সম্মানী কেমনঃ এখানে প্রথমদিকে হয়তো আয়ের পরিমাণটা কম।তবে অভিজ্ঞতা অর্জনের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আয় রোজগার। দেশে আপনার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সম্মানী ১০-৫০ হাজার টাকা হয়ে থাকে।তবে ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এ অঙ্ক বাড়তে পারে।আর যদি সাংবাদিকতার মাধ্যমে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সাংবাদিক হওয়া যায় তাহলে সম্মানী এর দ্বিগুণও হতে পারে।
PRESS PASS
সাংবাদিকরা দালালি ছাড়ুন দালালরা সাংবাদিকতা ছাড়ুন:-
১. সাইনবোর্ড সাংবাদিক
২. আইডিকার্ড সাংবাদিক
৩. ভুয়া সাংবাদিক
৪. কিছু প্রেসক্লাব ভিত্তিক সাংবাদিক
৫. বহুমাত্রিক সাংবাদিক
৬. কথাসাহিত্যিক সাংবাদিক
৭. দলীয় সাংবাদিক
৮. ভবিষ্যতদ্রষ্টা সাংবাদিক
৯. মৌসুমী সাংবাদিক
১০. শখের সাংবাদিক
১১. অপসাংবাদিক
১২. স্বার্থপর সাংবাদিক
১৩. বঞ্চিত সাংবাদিক
১৪. লাঞ্ছিত সাংবাদিক
১৫. কাঙ্খিত সাংবাদিক
১৬. ফেসবুক সাংবাদিক
১৭ পেশাগত সাংবাদিক ——_—-
কোন প্রকার কে কে পদে আছে কিছুটা তুলে ধরলাম।
কাহারো ব্যক্তি গত ছোট করার জন্য নয়,
কিছু সম্পাদক এমন আছে পেপার পত্রিকা নাই শুধু কার্ড বিক্রি করে, না আছে পেপার, না আছে কোন মিডিয়া, ঢাকা ভিতর বেশীর ভাগ সম্পাদকরা ভুয়া কার্ড বিক্রি করে যাচ্ছে, সহজ সরল কিছু ছেলে মেয়েরা তাদের গপ্পরে পরে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ, আর অর্থের বিনিময় হাতে এক খানা আইডি কার্ড ধরিয়ে দেয়।এটা ঐ তাদের পেশা ————
১.সাইনবোর্ড সাংবাদিক—
সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা কিংবা জিম্মি করে টাকা আদায়ই তাদের পেশা। এরা অনেককে সাংবাদিক বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থকড়ি নেয়। মতিঝিল পাড়ায় এদের সাইনবোর্ড সমৃদ্ধ ছোটখাট অফিসের দেখা মেলে।
২. আইডিকার্ড সাংবাদিক—
এরাও সাইনবোর্ডধারী সাংবাদিকদের মতোই। তবে এদের মিডিয়ার নিবন্ধন থাকে। কিন্তু তাদের প্রচার খুবই কম। কাউকে ভয় দেখানোর জন্য এরা হুটহাট এফবিআই স্টাইলে নিজের ‘আইডি কার্ড’ বের করে সামনে ধরে।
৩. ভুয়া সাংবাদিক—
সাংবাদিক না, অথচ সাংবাদিকের ভুয়া আইডি গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় এরা। চাঁদাবাজি থেকে তদবির বাণিজ্য- সবই করে। এমনকি ধরা পড়লে তারা গণপিটুনি খাওয়ার জন্যও তৈরি থাকে।
৪. প্রেসক্লাব সাংবাদিক—
সাংবাদিকতা নয়; এরা পারলে দিনের ২৪ ঘন্টাই প্রেসক্লাবে পড়ে থাকে। প্রেসক্লাবই তাদের ঘরবাড়ি-তীর্থস্থান। কোনো কাজ নেই, কোনো কর্ম নেই। শুধুই আড্ডাবাজি, চা-বাজি, রাষ্ট্র উদ্ধারসহ দেশ-বিদেশের বিবিধ কর্ম নিয়ে এরা দিনমান গুজার করে। অনেকের দলীয় সংযোগ থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক চাকরি খোয়ানোর ঝামেলা হয় না। অনেকের আবার মিডিয়া প্রতিষ্ঠানও নেই!
৫. বহুমাত্রিক সাংবাদিক—
এরা বহুমাত্রিক প্রতিভাধর সাংবাদিক! এদের আইডি কার্ড ও ভিজিং কার্ডে একাধারে অনেকগুলো পরিচয় লিপিবদ্ধ থাকে। যেমন: সাংবাদিক, রাজনীতিক, কবি, ডাক্তার, আইনজীবী প্রভৃতি। এ যুগে যদি অ্যারিস্টটল, প্ল্যাটো কিংবা সক্রেটিসরা বেঁচে থাকতেন, এই বহুমাত্রিক প্রতিভাধর সাংবাদিকদের জ্ঞানগরিমা দেখে তারা আত্মহত্যা করতেন।
৬. কথাসাহিত্যিক সাংবাদিক—
কোনো কোনো পত্রিকা হাউসে এমনও রিপোর্টার আছেন, যাদেরকে খোদ সাংবাদিকরাই কথাসাহিত্যিক বলে ডাকেন। এই কথাসাহিত্যিক কিন্তু সাহিত্যের কথাসাহিত্যিক নয়। তবে তাদের কাজটা অনেকটা সে রকমই। সংবাদের অভাবে পত্রিকার পাতা ভরানোর সংকট সৃষ্টি হলে তারা সম্পাদক কিংবা বার্তা সম্পাদক।














